পটুয়াখালীর দশমিনায় মাদকাসক্ত যুবকের হামলায় এক শিশু নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন মা ছেলেসহ একই বাড়ির অন্তত চার জন। এ ঘটনায় ঘাতক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড চরহোসনাবাদ গ্রামের মৃধা বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ঘাতক সবুজ (৩০) ওই গ্রামেরই বাসিন্দা।
জানা যায়, কোনো কারণ ছাড়াই আচমকা সবুজ ওই বাড়ির লোকজনদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। তাদের ডাকচিৎকারে বাড়ির ও আশেপাশের লোকজন দৌঁড়ে এলে ধাওয়া খেয়ে সবুজ তাৎক্ষণিক দৌঁড়ে পালাতে না পেরে একটি সুউচ্চ গাছের মগডালে আশ্রয় নেয়।
তাৎক্ষণিক স্থানীয় লোকজন আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে যায়। কিছু স্থানীয়রা ওই গাছ ঘিরে রাখে যাতে সবুজ পালাতে না পারে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সবুজকে আটকের চেষ্টা চালায়।ওই গাছটি কাটার চেষ্টা করলে সে হাতে থাকা লোহা সদৃশ কিছু পুলিশের গায়ে মারার চেষ্টা করে।
পরে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ও স্থানীয়রা ওই গাছ কাটার উদ্যোগ নিলে সে লাফিয়ে আরেক চাম্বল গাছের চূড়ায় চলে যায়। পুলিশের হাতে ধরা না পড়তে একইভাবে সে লাফিয়ে লাফিয়ে চারটি গাছ পরিবর্তন করে আরেকটি চাম্বল গাছের প্রায় ৭০ ফুট উচ্চতায় অবস্থান করে। পরে বিশেষ কৌশলে রাত সোয়া ১০টার দিকে স্থানীয় ও ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় ঘাতক সবুজকে নিরাপদে গাছ থেকে নামিয়ে আটক করে পুলিশ।
এদিকে, গুরুতর আহত ওই গ্রামের জামাল বেপারির শিশু ছেলে সাফায়েত (৮) রাত ৮টার দিকে বরিশালের শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে নেয়ার পর পরই মৃত্যুবরণ করে বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
আহতরা হলেন, একই বাড়ির বাহাদুর মুন্সির স্ত্রী মরিয়ম (২৮) ও তার শিশু ছেলে মুহিত হাসান (৮), সাইদুলের স্ত্রী নাসিমা (৩২) এবং পঞ্চম আলীর ছেলে বাবুল (৪৭)। তারা সবাই একই বাড়ির বাসিন্দা।
জানা যায়, আহতদের মধ্যে সাফায়েত, মুহিত হাসান ও তার মা মরিয়মকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশংকাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেন চিকিৎসকরা। অপর দু'জন নাসিমা ও বাবুলকে দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রাহুল বিন হালিম ডেইলি অবজারভারকে বলেন, 'গুরুতর আহত দুই শিশু সাফায়েত ও মুহিত হাসানের অবস্থা খুবই আশংকাজনক। একই অবস্থা মুহিত হাসানের মা মরিয়মের। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।'
চিকিৎসকের এই বক্তব্য গ্রহণের কিছু সময় পর শিশু সাফায়েতের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।
দশমিনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল আলীম ডেইলি অবজারভারকে বলেন, 'আমি ঘটনাস্থলে থেকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহায়তায় ঘাতক সবুজকে গাছ থেকে নামিয়ে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।'