নাটোরের গুরুদাসপুরে কামরুল ইসলাম নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যৌতুক দাবি ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেছেন তার তৃতীয় স্ত্রী মাহফুজা চৌধুরী, যিনি একজন বিসিএস শিক্ষা কর্মকর্তা।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কামরুল ইসলাম উপজেলার মশিন্দা কান্দিপাড়া গ্রামের সোলাইমান আলীর ছেলে এবং রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা। পারিবারিকভাবে ২০২০ সালে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে কামরুল ইসলামের সঙ্গে মাহফুজা চৌধুরীর বিবাহ হয়।
বিয়ের পর থেকেই কামরুল তার স্ত্রীর কাছ থেকে নানা অজুহাতে অর্থ দাবি করতে থাকেন। প্রথম দিকে টাকা পয়সা দিলেও পরে তা বন্ধ করে দিলে স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন তিনি। এ দম্পতির সংসারে একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
গত এপ্রিল মাসে নির্যাতনের ফলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় মাহফুজাকে। পরে তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন কামরুল এবং এরপর থেকে আর কোনো যোগাযোগ রাখেননি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ন্যায় বিচারের আশায় মাহফুজা গত ১৭ ও ২৮ সেপ্টেম্বর সিলেট মেট্রোপলিটন আদালতে দুটি মামলা দায়ের করেছেন—মামলা নম্বর ৩২১ ও ১৩০০।
মাহফুজা চৌধুরী বলেন, “কামরুল একাধিক বিয়ে করে প্রতারণা করেছেন। প্রথমে খালাতো বোন রাশিদাকে বিয়ে করে তালাক দেন এবং সেই মামলায় জেলও খাটেন। এরপর টাঙ্গাইলের মাহফুজা সুলতানা শিউলীকে বিয়ে করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে তাকেও তালাক দেন। এতো কিছুর পরেও তার সঙ্গে সংসার করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু যৌতুকের চাপ ও নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে পরি।”
তিনি আরও জানান, একমাত্র সন্তানটির খোঁজও নেন না কামরুল। তবুও সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সংসার টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন তিনি।
অন্যদিকে অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আদালতের মাধ্যমে উভয় পরিবারের উপস্থিতিতে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু স্ত্রী এককালীন ৩০ লাখ টাকা এবং প্রতি মাসে ৪০-৪৫ হাজার টাকা হাতখরচ দাবি করেন—যা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। সে আমার প্রমোশন আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেছে এবং সন্ত্রাসী দিয়ে হত্যার হুমকিও দিয়েছে।”
মশিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বারী বলেন, “সিলেট থেকে কামরুলের বর্তমান স্ত্রী একবার আমাকে ফোনে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। পরে আর যোগাযোগ করেননি। যেহেতু বিষয়টি আদালতে গিয়েছে, তাই এখন আমার কিছু করার নেই।”
এমএএম/এসআর