খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হঠাৎ করেই কর্মবিরতিতে গেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতাল পরিচালক বরাবর চার দফা দাবি জানিয়ে তারা এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে: হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, আনসার সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি, আনসারদের মোবাইল টিম গঠন, সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসকের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা।
ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. শেখ আল-আমিন জানান, বৃহস্পতিবার ভোররাত পৌনে ৫টার দিকে সার্জারি ওয়ার্ডের ইউনিট-১-এ এক পুরুষ রোগী সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুর পরপরই রোগীর স্বজনরা কর্মরত ইন্টার্ন চিকিৎসকের ওপর হামলা চালান। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও নিরাপত্তার দাবিতে তারা চার দফা দাবি উত্থাপন করে দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করছেন।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সহকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা হলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।”
অন্যদিকে, কোনো পূর্বঘোষণা বা আলটিমেটাম ছাড়াই হঠাৎ কর্মবিরতিতে যাওয়ায় রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সপ্তাহের শেষ দিনে এ ধরনের ধর্মঘটে ভর্তি রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। দুপুরের পর থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অনুপস্থিতিতে হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়। অনেক মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসায় জটিলতা দেখা যায় এবং নার্সদের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়।
হাসপাতালের রেকর্ড অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত খুমেক হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ১,৬৪৩ জন।
এদিকে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের রেকর্ডে দেখা যায়, বুধবার (৮ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১টা ২০ মিনিটে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এক পুরুষ রোগীকে সার্জারি ইউনিট-১-এ ‘অজ্ঞাতনামা’ হিসেবে ভর্তি করা হয়। ভ্যানচালক রনি নামের একজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে রোগীর মোবাইল থেকে তার ছেলেকে ফোন করে ঘটনার কথা জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রনি বলেন, “নগরীর সোনাডাঙ্গা আলির ক্লাব মোড়ে দুর্ঘটনায় আহত অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে পাই। পরে হাসপাতালে এনে ভর্তি করি। তার মোবাইল থেকে ছেলেকে খবর দিয়ে চলে আসি।”
নিহত ব্যক্তির বাড়ি যশোরের অভয়নগর এলাকায় বলে জানা গেছে। তবে চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনার পর কীভাবে মৃতদেহটি বিনা ময়নাতদন্তে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হলো, সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
এসএস/আরএন