Friday | 3 October 2025 | Reg No- 06
Epaper | English
   
English | Friday | 3 October 2025 | Epaper
BREAKING: পাকিস্তানকে হারালো বাংলাদেশ      প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা      ফ্লোটিলার সব জাহাজ আটক, গ্রেফতার ৩১৭ স্বেচ্ছাসেবী      বৈরী আবহাওয়ায়ও কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল      খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের ঘটনায় পুলিশের ৩ মামলা       নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস উল্টে নিহত ৩       ওষুধ কোম্পানিগুলো অতিরিক্ত মুনাফা করছে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা      

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সম্প্রীতির মেলবন্ধন

Published : Thursday, 2 October, 2025 at 5:34 PM  Count : 41

টানা পাঁচ দিনের পূজা-অর্চনার আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটেছে। 

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের তীরে হাজার হাজার ভক্তের উপস্থিতিতে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। এসময় সেখানে ছিল বিষাদের সুর।

সমুদ্র সৈকত এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিকেল থেকেই ঢাক-ঢোল, কাঁসর-ঘণ্টার বাজনার তালে তালে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন মন্দির ও মহল্লা থেকে শোভাযাত্রা করে প্রতিমাগুলো কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আনা হয়। পরে নৌকাযোগে সেগুলো নিয়ে যাওয়া হয় সৈকতের মাঝখানে, সেখানে সম্পন্ন করা হয় বিসর্জন। এসময় ভক্তদের কারও চোখে দেখা যায় অশ্রু, কারও ঠোঁটে শোনা যায় দেবীর বন্দনা। কেউবা সমুদ্র সৈকতের পানি ছিটিয়ে নিচ্ছিলেন নিজের ও পরিবারের সদস্যদের শরীরে।

বৃহস্পতিবার সারাদিন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ঝরেছে। বঙ্গোপসাগরের ঢেউও অস্বাভাবিক উঁচুতে তীরে আছড়ে পড়ছিল। এই বৈরী পরিবেশেও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছে সবাই।

বুধবার সকাল থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ঠাঁই নেই। দুর্গাপূজার চারদিনের ছুটিতে লাখো পর্যটক কক্সবাজার ঘুরতে এসেছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে সৈকতেই অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রতিমা বিসর্জন উৎসব। বর্ণাঢ্য আয়োজনে এই বিসর্জন দেখতে পর্যটক ও স্থানীয়দের ভিড় ছিল লক্ষণীয়।

সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে চার দিনের ছুটিতে চার-পাঁচ লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। এর উল্লেখযোগ্য একটি অংশ প্রতিমা বিসর্জন উৎসব উপভোগ করেছে। প্রতিমা বিসর্জন সুন্দর ও নির্বিঘ্ন করতে সব প্রস্তুতি ছিল। তাই প্রশাসন বিসর্জন অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তর কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান বলেন, বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টির কারণে কক্সবাজার উপকূল উত্তাল হয়ে পড়েছে। কক্সবাজার উপকূলে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।

বীচকর্মীরাও সতর্ক বাঁশি বাজাচ্ছিলেন, তবুও পানিতে নামছে পর্যটকরা
বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, সৈকতের সুগন্ধার উত্তরে সিগাল-লাবনী থেকে দক্ষিণে কলাতলী পর্যন্ত চার কিলোমিটার জুড়ে পর্যটকদের উল্লাস। মেঘলা আকাশ, ঝোড়ো হাওয়া আর মৃত্যু-ঝুঁকিপূর্ণ গুপ্তখাল—কোনো কিছুই ভ্রমণকারীদের আনন্দে ভাটা দিতে পারেনি। বীচকর্মীরাও সতর্ক বাঁশি বাজাচ্ছিলেন। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অনেকেই পানিতে নামতে দেখা গেছে।

পুলিশ ও লাইফগার্ডদের তথ্য অনুযায়ী, ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ কক্সবাজার সৈকতের মধ্যে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় (কলাতলী থেকে লাবনী) লাইফগার্ড সেবা রয়েছে। বাকি দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী, পাটোয়ারটেক থেকে টেকনাফ সৈকত পর্যন্ত কোথাও এ সেবা নেই। তাই তারা পর্যটকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন।

জানতে চাইলে বেসরকারি সি-সেফ লাইফগার্ডের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, কলাতলী থেকে সুগন্ধা পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার সৈকতে ছোট-বড় ১০ থেকে ১২টি গুপ্তখাল সৃষ্টি হয়েছে। সিগাল ও লাবনী এলাকার সৈকতে এ খাল সবচেয়ে বেশি। সেখানে লাল নিশানা টাঙালেও অনেকে ঝুঁকি নিয়ে পানিতে নামছেন। গত তিন দিনে অন্তত ২৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

শেষ হল প্রতিমা বিসর্জন
জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের তথ্যমতে, এবার জেলার ৯টি উপজেলা ও তিনটি পৌরসভায় ৩১৭টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে উখিয়া, ঈদগাঁও, রামু ও সদর উপজেলার পিএমখালী, চৌফলদন্ডী, খুরুশকুল এলাকার প্রতিমা ট্রাকবোঝাই করে শহরে আনা হয়। পরে পৌরসভার ১১টি মণ্ডপের প্রতিমাসহ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সৈকতের লাবনী পয়েন্টে নেওয়া হয়। বিকেল তিনটায় সৈকতের বিজয়মঞ্চে শুরু হয় আলোচনা সভা। বিকেল পাঁচটায় মন্ত্রপাঠের মাধ্যমে সব প্রতিমা বঙ্গোপসাগরে বিসর্জন দেওয়া হয়।

পরিষদের জেলা সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) উদয় শঙ্কর পাল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার প্রতিমা সেখানকার মাতামুহুরি নদীতে বিসর্জন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ। এছাড়া কুতুবদিয়া ও টেকনাফের প্রতিমা সেখানকার সৈকতে বিসর্জন দেওয়া হবে। উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের হিন্দু শরণার্থীদের প্রতিমা উখিয়ার প্রতিমা বহরের সঙ্গে কক্সবাজার সৈকতে আনা হবে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আ. মান্নান বলেন, বিসর্জন উপলক্ষে সৈকতের তিন স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী পূজামণ্ডপগুলোতে র‌্যাব, সেনা, বিজিবি, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল ও নজরদারি রাখা হয়। সুন্দরভাবে বিসর্জন উৎসব সম্পন্ন হয়েছে। তিনি জেলাবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এএইচএসইউ/এসআর

সম্পর্কিত   বিষয়:  কক্সবাজার  


LATEST NEWS
MOST READ
Also read
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000.
Phone: PABX- 41053001-06; Online: 41053014; Advertisement: 41053012.
E-mail: [email protected], news©dailyobserverbd.com, advertisement©dailyobserverbd.com, For Online Edition: mailobserverbd©gmail.com
🔝
close