কয়েকদিন ধরে বঙ্গোপসাগরে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। গতকাল থেকে আকাশ মেঘাছন্ন। বৃহস্পতিবার থেকে সারাদিন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ঝরঝে। বঙ্গোপসাগরের ঢেউও অস্বাভাবিক উঁচুতে তীরে আছড়ে পড়ছে। এই বৈরী পরিবেশেও কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। আনন্দ উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছে।
বুধবার সকাল থেকে কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকতে ঠাঁই নেই। দুর্গাপূজার চারদিনের ছুটিতে লাখো পর্যটক কক্সবাজার ঘুরতে এসেছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সৈকতেই অনুষ্ঠিত হবে প্রতিমা বিসর্জন উৎসব। বর্ণাঢ্য আয়োজনে এই বিসর্জন দেখতে পর্যটক ও স্থানীয়দের ভিড় বাড়বে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সৈকতে পর্যটকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে চার দিনের ছুটিতে চার-পাঁচ লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটবে। এর উল্লেখযোগ্য একটি অংশ প্রতিমা বিসর্জন উৎসব উপভোগ করবেন। প্রতিমা বিসর্জন উৎসব সুন্দর ও নির্বিঘ্ন করতে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদ সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) উদয় শংকর পাল বলেন, এবারের প্রতিমা বিসর্জন উৎসবে তিন লাখ মানুষের উপস্থিতি আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে এক লাখ হিন্দু ধর্মের। বাকি দুই লাখ পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দা। দেশের সর্ববৃহৎ প্রতিমা বিসর্জন উৎসব হওয়ায় অনেকে দেখতে ছুটে আসেন।
কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তর কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান বলেন, বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টির কারণে কক্সবাজার উপকূল উত্তাল হয়ে পড়েছে। কক্সবাজার উপকূলকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।
জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের তথ্যমতে, এবার জেলার ৯টি উপজেলা ও তিনটি পৌরসভাতে ৩১৭টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হয়েছে। জেলার উখিয়া, ঈদগাঁও, রামু ও সদর উপজেলার পিএমখালী, চৌফলদন্ডী, খুরুশকুল এলাকার প্রতিমা ট্রাক বোঝাই করে শহরে আনা হবে। পরে পৌরসভার ১১টি মণ্ডপের প্রতিমাসহ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সৈকতের লাবনী পয়েন্টে নেওয়া হবে। বিকেলেল সৈকতের বিজয়মঞ্চে শুরু হবে আলোচনা সভা। বিকেল পাঁচটায় মন্ত্রপাঠের মাধ্যমে সকল প্রতিমা বঙ্গোপসাগরে বিসর্জন দেওয়া হবে।
বিসর্জন উৎসব সুন্দরভাবে পালিত হবে বলে আশা প্রকাশ করে জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল মান্নান বলেন, সৈকতের তিন স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এএইচএসইউ/এসআর