খাগড়াছড়িতে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। অবরোধ অব্যাহত থাকায় ১৪৪ ধারা অব্যাহত রাখা হয়েছে খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারা উপজেলায়। এ দুই উপজেলায় সংঘর্ষের ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে গুইমারার রামশু বাজারের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন ও নিহতের পরিবারের সাথে দেখা করতে এসে এসব তথ্য জানান খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার। তবে ৫ সদস্যে কে কে রয়েছেন তা জানানো হয়নি।
তিনি আরও বলেন, অবরোধ কর্মসূচি ডাকা সংগঠনের সাথে প্রশাসনের বৈঠক হয়েছে। তাদের উত্থাপিত ৮ দফার মধ্যে ৭ দফা নিয়ে ইতোমধ্যে আমলে নেয়া হয়েছে। অবরোধ অব্যাহত থাকায় ১৪৪ ধারা শিথিল করা হচ্ছে না।
এদিকে, গুইমারার রামশু বাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকে আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন। সংঘর্ষের পর মামলা আতঙ্ক ভর করেছে কারো কারো মনে। তবে প্রশাসন থেকে আশ্বাস দেয়া হয়েছে কোন নির্দোষ গ্রামবাসীকে হয়রানি করা হবে না।
এ দিকে গুইমারা ও
খাগড়াছড়ি সদরের সংঘর্ষের ঘটনায় ইউপিডিএফর ইন্ধন রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। মঙ্গলবার দুপুরে গুইমারা রিজিয়নে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন রিজিয়ন কমান্ডার। কোন অবৈধ অস্ত্রধারীকে ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
গত সোমবার থেকে খাগড়াছড়ি চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি ঢাকা সড়কে অবরোধ শিথিল করা হলেও নিরাপত্তা সংকটের কারণে দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। জেলার প্রবেশ মুখ রামগড় ও মানিকছড়িতে আটকা পড়েছে পণ্য বাহি অনেক পরিবহন।
মঙ্গলবার খাগড়াছড়ির সিঙ্গিনালায় এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে প্রতিবাদ করে জুম্ম ছাত্র জনতা নামে একটি সংগঠন। এ সংগঠন গেল বৃহস্পতিবার আধাবেলা ও শনিবার সকাল সন্ধ্যা সড়ক অবরোধের ডাক দেয়। শনিবার দুপুরে খাগড়াছড়ি সদরের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ সমর্থকদের সাথে সংঘর্ষ হয় পৌর শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সে দিন দুপুর ২ টা থেকে সদর উপজেলায় এবং বিকেল ৩ টা থেকে গুইমারা উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। বিপরীতে জুম্ম ছাত্র জনতা অনির্দিষ্টকালের সড়ক অবরোধ কর্মসূচি দেয়। গত রোববার ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে অবরোধের সমর্থনে গুইমারার পিকেটিং করার সময় তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তখন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে দুর্বৃত্তরা শতাধিক বসত বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করে। পুড়িয়ে দেয়া হয় বহু যানবাহন।
এনএম/ এসআর