বরগুনার উপকূলীয় আমতলী ও তালতলী উপজেলার সড়কপথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হলো আমতলী-তালতলী আঞ্চলিক সড়ক। ৩৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সড়কটি গর্ত ও খানাখন্দে ভরে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। সড়কের বেশির ভাগ অংশজুড়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে আমতলী-তালতলী উপজেলার অন্তত লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।
দুর্ভোগ কমাতে খানাখন্দে ভরা সড়কের কোথাও কোথাও জরুরি ভিত্তিতে মাঝে মধ্যে সংস্কার হলেও তা কোনো কাজেই আসে না। খানাখন্দকময় ভাঙা সড়কে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে। এতে এলাকাবাসী ও যানবাহন চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আর প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
কোনো কোনো সড়কে পণ্য পরিবহন তো দূরের কথা, মানুষ চলাচলেরই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় রোগী এবং স্কুলগামী শিশুদের। দুর্ভোগ কমাতে দ্রুত সড়ক মেরামতের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, আমতলী থেকে তালতলীর উপজেলার সর্ব দক্ষিণে ফকিরহাট মৎস্য বাজার ও সোনাকাটা ইকোপার্ক পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ সড়ক। দুটি উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই সড়কটি দিয়ে লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত করেন। এছাড়াও সড়কপথে শুভসন্ধ্যা পর্যটন স্পট, সোনাকাটা ইকোপার্ক, নিদ্রাচর, ডিসি পয়েন্ট, তালতলী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। এই সড়কটি জুড়ে রয়েছে গর্ত ও খানাখন্দ।
সড়কের আমতলীর মানিকঝুড়ি থেকে তালতলীর কচুপাত্রা সেতু পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার, তালতলীর কড়াইবাড়িয়া বাজার থেকে হরিণবাড়িয়া সেতু পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার ও তালতলী সেতু থেকে ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কটিতে ছোট-বড় গর্ত ও খানাখন্দে ভরা।
এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীবাহী ছোট-বড় যানবাহনগুলো গর্তের মধ্যে পড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে থাকে। খানাখন্দের কারণে সড়কটি বেহাল দশায় পরিণত হওয়া ও যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় এক রকম জীবনের ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন যানবাহন ও হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সড়কের অধিকাংশ জায়গায় ইট-পাথরের সুরকি উঠে মাটি বের হয়ে গেছে।বৃষ্টির পানি জমে থাকায় গর্তে গাড়ির চাকা ফেঁসে গিয়ে কাদা মাটিতে সড়কটি একাকার হয়ে গেছে। সড়কের মাঝের গর্তগুলো দূর থেকে দেখলে মনে হবে ছোট আকারের ডোবার মত।
আমতলীর আড়পাঙ্গাশিয়া বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সরোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, 'সড়কটি নির্মাণের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সড়কের ইট-পাথরের সুরকি উঠে মাটি বের হয়ে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। এক বছর ধরে এই সড়ক দিয়ে যানবাহন ও মানুষ চলাচলে খুবই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দ্রুত সড়কটি মেরামতের দাবি জানাই।'
আমতলী উপজেলার মানিকঝুড়ি-কচুপাত্রা, ঘোপখালী-সোমবাড়িয়া বাজার। তালতলী উপজেলার ছোটবগী-তালতলী, পঁচাকোড়ালীয়া-চান্দখালী, তালতলী-সোনাকাটা, ছোটবগী-কড়ইবাড়িয়া বাজার সড়কগুলো ও খানাখন্দ ভরা।
তালতলীর মেহেদী হাসান বলেন, 'এ সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা মানুষের হাঁটতেই কষ্ট হয়।'
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)'র সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোস্তফা কাদের বলেন, 'প্রতি বছরই সড়ক মেরামত হয়। কিন্তু বরাদ্দ কম থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক কমছে না। সমবণ্টনের পাশাপাশি উপকূলীয় জেলা হিসেবে সড়ক মেরামতে বেশি বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানাই।'
বরগুনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান খান বলেন, 'অগ্রাধিকারভিত্তিতে বরাদ্দের জন্য স্কিম তৈরি করে প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পাওয়া গেলে অগ্রাধিকারভিত্তিতে সড়ক মেরামত করা হবে।'