কুমিল্লার হোমনা উপজেলার বিভিন্ন মাজারে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও টহলে রয়েছেন।
শনিবার হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, কোনো মাজারে যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য উপজেলার আসাদপুরের কফিল উদ্দিন শাহ, হাওয়ালী শাহ (বাবুল), আবদু শাহ এবং পঞ্চবটির সোলেমান শাহসহ মোট ১০টি মাজারে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একইসঙ্গে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ সেপ্টেম্বর উপজেলার আসাদপুর গ্রামের ফকিরবাড়ির মরহুম কফিল উদ্দিন শাহ’র নাতি মহসিন তার ফেসবুক আইডি বেমজা মহসিন থেকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তিমূলক পোস্ট দেন। এতে স্থানীয় মুসলিম জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং তার বিচার দাবি করে।
ঘটনার পরপরই হোমনা থানা পুলিশ মহসিনকে গ্রেপ্তার করে। পরে উপজেলা ইসলামী যুবসেনার নেতা শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে পুলিশ তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায়।
এর পরদিন ১৮ সেপ্টেম্বর সকালে নবীজি (সা.)-কে কটূক্তির প্রতিবাদে আসাদপুর গ্রামে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ইউএনও-র প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা সাইদুল হক এবং ইসলামী আন্দোলনের নেতা মাওলানা তাইজুল ইসলাম। তারা সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান এবং পরিস্থিতি শান্ত রাখার আহ্বান জানান।
তবে এরপরও বিক্ষুব্ধ জনতা কফিল উদ্দিন শাহ’র মাজারে মাদক সেবনের আসর ও শরিয়তবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে হামলা চালায়। তারা মাজারের কিছু জিনিসপত্র ভাঙচুর করে, ভিতরের কাঁথা-বালিশ আগুনে পুড়িয়ে দেয় এবং মহসিনের বাড়িঘরেও আগুন দেয়।
পরে উত্তেজিত জনতা একই অভিযোগে কালু শাহ, হাওয়ালী শাহ (বাবুল) এবং আবদু শাহ’র মাজারেও আংশিক ভাঙচুর চালায়।
মাজার ভাঙচুর ও বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে অজ্ঞাতনামা ২ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
কেএইচ/আরএন