নাটোরে এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা যেন শান্তি, সৌন্দর্য ও সম্প্রীতির এক অক্ষয় উৎসবে পরিণত হতে চলেছে। জেলার সাতটি উপজেলায় ৩৬৮টি পূজামণ্ডপে দেবী দুর্গার আরাধনার জন্য চলছে শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জা। পুরো জেলাজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
নিরাপদ ও আনন্দঘন পরিবেশে দুর্গোৎসব উদযাপনের লক্ষ্যে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতোমধ্যে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, পূজা যেন নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়, সেজন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলার গুরুত্বপূর্ণ ৬৯টি মণ্ডপে থাকবে পুলিশের কড়া নজরদারি। পাশাপাশি প্রতিটি পূজামণ্ডপে আনসার সদস্য ও পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
সম্প্রতি জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, উৎসবকালীন সেনাবাহিনী ও র্যাবের টহলও জোরদার করা হবে। ভ্রাম্যমাণ টিম হিসেবে তারা মাঠে কাজ করবে।
জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন বলেন, “শান্তিপূর্ণ পূজা উদযাপনে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসন সদা তৎপর থাকবে।”
উপজেলা অনুযায়ী পূজামণ্ডপের সংখ্যা হলো: নাটোর সদর ৭৮টি, সিংড়া ৮৫টি, বাগাতিপাড়া ২৭টি, লালপুর ৪১টি, গুরুদাসপুর ৩৩টি, নলডাঙ্গা ৫৮টি এবং বড়াইগ্রাম ৪৬টি।
ইতোমধ্যে প্রতিমা বিসর্জনের সময়সূচি নির্ধারণ করে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্য যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ প্রশাসন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. ইফতেখায়ের আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) শোভন চন্দ্রসহ জেলা ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সমস্যাগুলোর সমাধানে পুলিশের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করা হয়।
সবশেষে জেলার মানুষ বিশ্বাস করছে, দেবীর আগমন হবে শান্তি ও শুভ শক্তির প্রতীক হয়ে। এবারের শারদীয় দুর্গোৎসব তাই নাটোরবাসীর কাছে কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য ও আনন্দে মিলনের এক অনন্য আবহ তৈরি করবে।
এমএ/আরএন