লোহাগাড়া উপজেলায় বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা। খড়, কাঠ, সুতা আর মাটি দিয়ে নিপুণ হাতে তৈরি করছেন প্রতিমা। পূজা যতই ঘনিয়ে আসছে, শিল্পীদের ব্যস্ততা ততটাই বাড়ছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, মন্দিরে কারিগররা ফুটিয়ে তুলছেন দুর্গা, লক্ষী, সরস্বতী, গণেশ-কার্তিক ও অসুরের প্রতিমা। মন্ডপে মন্ডপে চলছে মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ আবার কোথাও শুরু হয়েছে রংয়ের কাজ।
আগামী ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্যে দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়বে। ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী, ২৯ সেপ্টেম্বর সপ্তমী, ৩০ সেপ্টেম্বর অষ্টমী, ১লা অক্টোবর নবমী, ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্যে দিয়ে ৫ দিনব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার পরিসমাপ্তি ঘটবে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেবী তৈরির কারিগরেরা এসেছেন কাজে। দুর্গাপূজা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব হিসেবে পালিত হয়। ঢাকের তালে আর শিউলীর মিষ্টি গন্ধে পুরো দেশে দুর্গাপূজার হাওয়া বইতে থাকে। প্রতিমা শিল্পীর কল্পনায় দেবী দুর্গার অনিন্দ্য সুন্দর রূপ দিতে সকাল থেকে শুরু করে রাতভর চলছে কাজ।
এবার লোহাগাড়া উপজেলার ১১১টি মন্ডপে হবে দুর্গাপূজা। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে বলে জানান উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি মৃনালন কান্তি দাশ। তিনি বলেন, এবার লোহাগাড়ার নয়টি ইউনিয়নে ১১১ টি পূজামন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। তার মধ্যে লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নে দুটি, পদুয়ায় ২০টি আমিরাবাদে ৩০টি, কলাউজানে ২৪টি, চরম্বায় ১১টি, পুটিবিলায় ৩ টি, বড়হাতিয়ায় ১৫টি, আধুনগরের ৩ তিনটি এবং চুনতিতে ৩টি পূজামন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
পদুয়া গুপ্ত বাড়ি সর্বজনীন কালীমন্দিরে এবার প্রতিমা তৈরি করছেন শ্যামল দাস। প্রতিটি প্রতিমা তৈরিতে নিচ্ছেন ৩০ হাজার টাকা থেকে দেড় লাখ টাকা। তিনি জানান, শেষ সময়ের কাজ চলছে এখন। এ জন্য তিনি ও তাঁর সহযোগীরা দিন-রাত কাজ করছেন। রাতে ঘুমানোর সময়ও পাচ্ছেন না। দুর্গোৎসব উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে পূজার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও খেলাধুলারও আয়োজন করা হয়েছে।
লোহাগাড়ার বিভিন্ন পূজামন্দির ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ মন্দিরেই প্রতিমার মাটির কাজ অনেকটা শেষ হয়ে গেছে। অনেক স্থানে অস্থায়ীভাবে পূজোর ঘর তৈরি হয়ে গেছে।
এদিকে পূজোর যে কদিন বাকি রয়েছে, সেই কদিন কারিগরদের ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে। অনেক জায়গায় রাত জেগে কাজ করতেছে কারিগররা।
উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি মৃনালন কান্তি দাশ জানান, 'শারদীয় দুর্গাপূজা একটি সার্বজনীন উৎসব। এ উপলক্ষে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রশাসনও আমাদের সহায়তা করার আশ্বস্ত করেছে।'
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম জানান, আসন্ন দুর্গাপূজা যাতে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় এবং সবার অংশগ্রহণ থাকে, তার জন্য প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
এমইউ/ এসআর