পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় চাঞ্চল্যকর ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনার প্রধান তিন আসামি কাওসার, আশীষ ও শওকত হোসেন রিপন সোহাগকে গ্রেপ্তার করেছে কলাপাড়া থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা সংস্থা।
শুক্রবার বেলা ১১টায় পটুয়াখালী পুলিশ সুপারের হল রুমে অনুষ্ঠিত প্রেস কনফারেন্সে এ তথ্য প্রদান করেন পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ।
পুলিশ জানায়, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বুধবার দিবাগত রাতে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর থানার শ্যামকুড় বর্ডার এলাকা থেকে কাওসার, ঢাকা মেট্রোপলিটনের দারুস সালাম থানাধীন বস্তি এলাকা থেকে সোহাগ রিপন এবং তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কলাপাড়া পৌর এলাকা থেকে আশীষ গাইনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কাওসার কলাপাড়া থানার লতাচাপলী এলাকার আবুল হোসেন হাওলাদারের ছেলে, সোহাগ রিপন বরগুনা জেলার বামনা থানার পোটকাখালী গ্রামের জালাল প্যাদা এবং আশীষ গাইন কলাপাড়া পৌর শহরের নাচনাপাড়া এলাকার রনজিৎ গাইনের ছেলে।
প্রেস কনফারেন্সে পুলিশ সুপার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে তারা ১৪ জুলাই রাত ৮:৩০ হতে ১০:৩০ এর মধ্যে বাদীর বসতবাড়ির সামনে থাকা পরিত্যক্ত বিল্ডিংয়ের মধ্যে অবস্থান নেয় এবং ডাকাতির পরিকল্পনা করতে থাকে। রাত আনুমানিক ১:৩০ মিনিটের সময়ে ডাকাত দলের কিছু সদস্য সেলাই রেঞ্চ, ২টি শাবল ও স্ক্রু ড্রাইভার এর সাহায্যে বাড়ির বেলকনির গ্রিল কেটে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে এবং ভিতর থেকে দরজা খুলে দেয়। তখন ডাকাত দলের বাকি সদস্যরাও বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে।
প্রবেশ করার পরে প্রথমে বাদীর বোনের হাত, মায়ের হাত-পা-চোখ এবং পরবর্তীতে বাদীর হাত-পা-মুখ-চোখ বেঁধে ফেলে। ডাকাতরা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল সেট লুণ্ঠন করার পরে কাওসার ও রিপন সোহাগকে বাড়ির ভিতরে দুই রুমের সামনে পাহারায় রেখে আশীষসহ অন্যান্য ডাকাতরা বাদীর সদ্য বিবাহিত আমেরিকান প্রবাসী স্ত্রীকে অন্য রুমে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ডাকাতি এবং গণধর্ষণ শেষে ডাকাত দল বাদীর পরিবারকে হুমকি-ধামকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে বেরিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, ১৪ জুলাই রোববার রাত আড়াইটায় জেলার কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী এলাকায় স্কুলশিক্ষক তরিকুল ইসলামের একতলা ভবনের বারান্দার গ্রিল কেটে ডাকাত দল ঘরে প্রবেশ করে। ঘরের সবাইকে একটি কক্ষে নিয়ে হাত-পা, চোখ-মুখ বেঁধে জিম্মি করে ফেলে। এরপর ডাকাতেরা অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে আলমারি ও শোকেসের চাবি জোর করে নেয়। তারা আলমারি ও শোকেস খুলে ১৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও ৫০ হাজার টাকা লুট করে। পরিবারের সদস্যদের হাত–পা, মুখ ও চোখ বেঁধে একটি কক্ষে ফেলে রেখে আমেরিকান প্রবাসী নববধূকে অপর একটি কক্ষে নিয়ে চারজন মিলে পাশবিক নির্যাতন ও ধর্ষণ করে।
পিএইচ/আরএন