বরগুনা জেলা বিএনপি অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম মিয়াকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। ওই মামলায় বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির ১২ জন সিনিয়র আইনজীবীকেও জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন জেলা দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নূরুল ইসলামসহ অন্যান্য আইনজীবীরা স্বেচ্ছায় বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। বিচারক মো. সাইফুর রহমান শুনানি শেষে তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম নজরুল ইসলামের ছেলে এসএম নঈমুল ইসলাম ২০২৩ সালের ১৭ মার্চ বিএনপি কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার অভিযোগ এনে ৩০ এপ্রিল বরগুনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বরগুনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে। এ ছাড়াও মামলায় আসামি করা হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর কবির, বরগুনা- আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার টুকু, বরগুনা পৌরসভার মেয়র অ্যাড. কামরুল আহসান মহারাজ, আমতলী পৌরসভার মেয়র মতিয়ার রহমান, বরগুনা বারের ১২ আইনজীবীসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ১৫৮ জন নেতাকর্মী এবং আরো দুই শতাধিক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে।
ওই মামলার এজাহারভুক্ত আমতলীর গুলিশাখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নূরুল ইসলামসহ ১২ সিনিয়র আইনজীবীরা গত ২ জুন হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন লাভ করেন। জামিনের শর্ত অনুযায়ী ৬ সপ্তাহের মধ্যে বরগুনা জেলা জজ আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ ছিল। সে অনুযায়ী তারা মঙ্গলবার আত্মসমর্পণ করলে আদালত শুনানি শেষে বিজ্ঞ বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. মো. নুরুল আমীন বলেন, ‘আসামিরা বিএনপি অফিসে হামলা, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছবি ভাঙচুর এবং বিষ্ফোরকদ্রব্য ব্যবহার সংক্রান্ত মামলার আসামি। বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাদের বিরুদ্ধে অগ্নিসংযোগের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। আদালত সব বিবেচনায় জামিন না মঞ্জুর করে তাদের জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।’
আসামিপক্ষের পক্ষের আইনজীবী বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মোতালেব ও সাবেক পিপি অ্যাড. ভূবন চন্দ্র হাওলাদার বলেন, ‘মিথ্যা মামলায় সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আমাদের বারের সিনিয়র ১২ আইনজীবীদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
এমএএসকে/ এসআর