আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকার (ডিইপিজেড) তিনটি কারখানায় শ্রমিকদের ৩ মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা ও সার্ভিস চার্জ পরিশোধ না করেই কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এসব কারখানার প্রায় ৩ হাজার শ্রমিক তাদের বকেয়া বেতন-ভাতা ও সার্ভিস চার্জ পরিশোধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে।
রোববার সকালে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের ইপিজেড এলাকায় সড়কে অবস্থান নিয়ে এই বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেন তারা।
এসময় সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে দীর্ঘ্য যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় ঘন্টাব্যাপী সড়ক অবরোধের কারণে দুর্ভোগে পড়েন সড়ক ব্যাবহারকারীরা। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ, থানা পুলিশ বেপজা কর্তৃপক্ষ মাইকিং করে শ্রমিকদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা জানায়, ডিইপিজেডের গোল্ড টেক্স, সাউথ চায়না ও এ্যাক্টর গার্মেন্টস কারখানা কর্তৃপক্ষ গত ৩ মাস ধরে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা ও সার্ভিস সার্জ পরিশোধ না করে বিভিন্ন ধরনের তালবাহানা করে আসছে। একের পর এক তারিখ দিয়ে বেতন-ভাতা পরিশোধ না করে হঠাৎ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে। এঘটনায় ভুক্তভোগী শ্রমিকরা ক্ষুদ্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করতে বাধ্য হয়।
বেপজা কর্তৃপক্ষ জানায়, গোল্ড টেক্স, সাউথ চায়না ও এ্যাক্টর গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ তাদের ব্যাংকিং সমস্যার কারণে বেতন দিতে পারছিলোনা। এই অবস্থায় শ্রমিকরা কাজ করায় কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। এর প্রতিবাদেই শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে সড়ক অবরোধ করেন। পরে আমরা তাদেরকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি।
বিক্ষুদ্ধ নারী শ্রমিক শেফালি খাতুন বলেন, গত তিন মাস ধরে তাঁরা নিয়মিত কাজ করলেও কর্তৃপক্ষ তাদের বেতন ও সার্ভিস চার্জের টাকা পরিশোধ করছে না। এই অবস্থায় তারা ধারদেনা করে পরিবার নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন। হঠাৎ করে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করায় তাঁদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে জীবিকা সংকটে পড়েছেন। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা বকেয়া বেতন-ভাতা আদায়ের জন্য রাস্তায় নেমেছেন।
সড়ক অবরোধের বিষয়টি নিশ্চিত করে শিল্প পুলিশ-১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসপি) ইফতেখার রহমান বলেন, শ্রমিকরা বিক্ষোভে নামলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করে। পরে তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
ডিইপিজেডের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) আব্দুস সোবহান জানান, ইতিমধ্যে শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ দ্রুত শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করবে। অন্যথায় ইপিজেড আইন অনুযায়ী অন্যান্য কারখানার শ্রমিকদের যেভাবে বেতন পরিশোধ করা হয়েছে এসব কারখানার শ্রমিকদেরও একইভাবে বেতন পরিশোধ করা হবে।
ওএফ/এসআর