ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ছে দুর্ভিক্ষ। এ পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, এটি এখন আর সম্ভাবনা নয়, বাস্তবতা। এদিকে, অপুষ্টি ও অনাহারে গাজায় আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তীব্র অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে গাজায় এক লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি শিশু।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলোর দাবি, ইসরায়েলের অবরোধ ও অব্যাহত হামলার ফলে জীবনরক্ষাকারী সহায়তা গাজায় প্রবেশ করতে পারছে না। এতে করে শিশুদের মধ্যে অনাহারে মৃত্যুর ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া এক বিবৃতিতে কর্মকর্তারা বলেন, গাজায় দুর্ভিক্ষ ও ব্যাপক ক্ষুধা একটি “ইচ্ছাকৃতভাবে সৃষ্ট মানবসৃষ্ট বিপর্যয়”।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক উপপ্রধান জয়েস মুসুইয়া জানান, উত্তর-মধ্য গাজা, বিশেষ করে গাজা সিটিতে ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ এটি দক্ষিণের দেইর আল-বালাহ ও খান ইউনিস অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
তিনি বলেন, “বর্তমানে গাজায় পাঁচ লাখের বেশি মানুষ অনাহার, দারিদ্র্য ও মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছেন। এই সংখ্যা সেপ্টেম্বরের শেষে ৬ লাখ ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। কার্যত গাজার কোনো মানুষই এখন ক্ষুধার হাত থেকে নিরাপদ নন।”
মুসুইয়া আরও জানান, গাজায় পাঁচ বছরের কম বয়সী অন্তত ১ লাখ ৩২ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে ৪৩ হাজারেরও বেশি শিশু আগামী কয়েক মাসে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পৌঁছাতে পারে। তিনি বলেন, “এটি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা খরার ফল নয়, বরং একটি মানবসৃষ্ট সংঘাতের পরিণতি, যা প্রাণহানি, ধ্বংস ও ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি ঘটিয়েছে।”
এর আগে বুধবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় “দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টিতে” আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে দুটি শিশু রয়েছে। এ নিয়ে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অনাহারে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১৩ জনে, যার মধ্যে ১১৯ শিশু।
আরএন