প্রায় দুই বছর ধরে গাজায় আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। সেখানে দখলদার বাহিনী গণহত্যা চালাচ্ছে। অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় এখন পর্যন্ত ৬২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। একটু নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় এক স্থান থেকে আরেক স্থানে ছুটে বেড়াচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। খাদ্য সরবরাহ বন্ধ রেখে মানুষকে অনাহারে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে। এমনকি পরিবারের জন্য খাদ্য সংগ্রহের সময়ও লোকজনকে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে।
ইসরায়েল গাজার বৃহত্তম শহর গাজা সিটিতে হামলা জোরদার করেছে। শহরটি এখন প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েল এই শহরটি দখল করে দক্ষিণাঞ্চলে কয়েক হাজার মানুষকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার পরিকল্পনা করছে।
এদিকে সোমবার ভোর থেকে গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৪ জন ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন।
একটি মেডিকেল সূত্র আল জাজিরাকে নিশ্চিত করেছে যে গাজা শহরের আল-সাব্রা এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত তিনজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে সাংবাদিক ইসলাম আল-কৌমিও রয়েছেন।
দেইর আল-বালাহ থেকে আল জাজিরা'র সাংবাদিক তারেক আবু আযম জানান, গাজা শহরের পূর্বাংশে ইসরায়েলি আক্রমণ এখনও অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, "আমরা দেখছি, ইসরায়েল ভারী কামান, যুদ্ধবিমান এবং ড্রোন ব্যবহার করে যেভাবে অবশিষ্ট আবাসিক ভবনগুলো ধ্বংস করছে—তা ভয়াবহ মাত্রার।"
বর্তমান সামরিক কৌশল থেকে এটা স্পষ্ট যে ইসরায়েল তার বাহিনীকে স্থলভাগে অভিযান চালাতে প্রস্তুত করছে এবং পরিকল্পিতভাবে আবাসিক এলাকা ধ্বংস করে চলেছে। সেখানকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ইসরায়েল দিন-রাত সমানভাবে হামলা চালাচ্ছে।
ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের কারণে যারা ইতোমধ্যে একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, তাঁরা আবার গাজা শহর ছেড়ে যাচ্ছেন। তবে অনেকে এখনো সেখানে অবস্থান করছেন।
রবিবার বিমান হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল গাজা সিটি। সেখানে প্রায় ৬০ জন নিহত হয়েছেন এবং ইসরায়েল সেখানকার অবশিষ্ট কয়েকটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে।
এদিকে কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় হামাসের পক্ষ থেকে গাজা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব অনুমোদনের ঘোষণার পর কিছুটা আশার আলো দেখা দিয়েছে। একটি সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, প্রস্তাবিত খসড়া চুক্তিতে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা হবে। এর আওতায় গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক অনির্দিষ্ট সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে।
আরএন