Monday | 27 October 2025 | Reg No- 06
Epaper | English
   
English | Monday | 27 October 2025 | Epaper
BREAKING: সালমান শাহ হত্যা মামলা: সামিরা-ডনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা      ড্যাফডিল-সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে আহত শতাধিক, প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা      ডেঙ্গুতে একদিনে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৯৮৩      জামালপুরে অটোরিকশা-কাভার্ড ভ্যান সংঘর্ষে নিহত ৪      সংস্কার নভেম্বরের মধ্যে শেষ করার তথ্য সঠিক নয়      কাদের নিয়ে বিএনপি জোট করবে জানালেন সালাহউদ্দিন      সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা প্রকাশ      

বালুমহাল: ১০ মাসের সহিংসতায় নিহত ৪

Published : Thursday, 14 August, 2025 at 2:33 PM  Count : 255

মুন্সীগঞ্জের পদ্মা ও মেঘনা নদীজুড়ে অবৈধ বালু ব্যবসা, সিন্ডিকেট আধিপত্য ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে একের পর এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, গোলাগুলি এবং প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। বালুমহালের চিহ্নিত লোকজন জলদস্যুদের সাথে নিয়ে এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ। 

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ২৮ জুলাই পর্যন্ত মুন্সীগঞ্জে বালুমহালকে কেন্দ্র করে অন্তত চার জন নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছেন।

জেলা পুলিশ, কোস্ট গার্ড ও নৌপুলিশের নিয়মিত টহল ব্যবস্থা না থাকায় পদ্মা ও মেঘনা নদী অরক্ষিত হয়ে একের পর এক হত্যা, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে বলে নদীপাড়ের মানুষের দাবি। বিশেষ করে ২০২৪ সালের ০৫ আগস্টের পর মেঘনা নদীর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এসব সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে। 

এদিকে, গত ১০ মাসে সহিংসতায় সরকারি হিসেবে চার জন নিহত হয়েছে। এসব ঘটনায় মামলা হলেও প্রকৃত অপরাধীরাও ধরাছোঁয়ার বাইরে। ঘটনার সাথে জড়িত জলদস্যুদের সাথে রয়েছে রাজনৈতিক নেতাদের শখ্যতা। আবার রাজনৈতিক নেতারা বাধ্য হয়েই জলদস্যুদের সাথে নিয়ে নদীর শাসক হচ্ছেন।

এসব ঘটনায় বুধবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মেঘনাপাড়ের গ্রাম চরমশুরার লোকজন মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। এই স্মারকলিপির অনুলিপি মুন্সীগঞ্জ সেনা ক্যাম্প ও পুলিশ সুপারের কাছেও দিয়েছেন।

স্মারকলিপিতে স্মাক্ষরিত লোকজন জানান, অবৈধ বালুমহালে বালুকাটা নিয়ে একের পর এক সহিংস ঘটনা ঘটছে। "যখন মানুষ খুন হয়, তখন প্রশাসন জাগে।" ঘটনা ঘটবে- এমন পরিস্থিতির সংবাদ আগে থেকেই শোনা যায়। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রশাসন ঘুমিয়ে থাকে। ঘটনা ঘটার পর তাদের ঘুম ভাঙে এবং কয়েকদিন তৎপর থাকে।

মুন্সীগঞ্জ সদরের কালিরচর গ্রামের আলী আহমদ জানান, জলদস্যুদের সাথে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও রয়েছে দহরম মহরম সম্পর্ক। জলদস্যুরা নৌ-পুলিশের পোশাক পরেও নদীতে মহড়া দেয় দিনের বেলায়। 

সরকারি হিসেব মতে, ২০২৫ সালের ৩০ জানুয়ারি সদর উপজেলার চরআব্দুল্লাহপুর ও চাঁদপুরের মোহনপুর সীমান্তে মেঘনায় অবৈধ বালু উত্তোলন, চাঁদাবাজি ও নদীর আধিপত্য নিয়ে দুই জলদস্যু কিবরিয়া মিয়াজী ও কানা জহির গংয়ের গোলাগুলিতে নিহত হয় দুই যুবক রিফাত (২৯) ও রাসেল (৩০)। পর দিন চর কালীরচরে প্রতিপক্ষ কানা জহির গংয়ের হামলায় গুলিবিদ্ধ হন অন্তঃসত্ত্বা নারী পিংকি আক্তার। ১৯ জুন মেঘনা নদীতে গ্রামবাসী ও ড্রেজার শ্রমিকদের সংঘর্ষে পাঁচ জন আহত হন। একটি ড্রেজার পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

২৬ জুলাই কালিরচর এলাকাবাসী অবৈধ বালু কাটার বিরুদ্ধে বাঁধা দিতে গেলে গ্রামবাসীর ওপর গুলি ছুঁড়ে জলদস্যু গং।

নৌ-ডাকাত কিবরিয়া মিয়াজী ও কানা জহিরের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ ডজনখানেকের ওপরে মামলা থাকলেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। 

২৮ জুলাই গজারিয়ায় বালু বিরোধে মেঘনায় 'শুটার মান্নান' নিহত হন। আহত হন আরও ৬ জন। ৩০ জুলাই কালীরচরে গ্রামবাসীর ধাওয়ায় পুড়িয়ে ফেলা হয় দুটি ড্রেজার। একই দিনে দু'জন ড্রেজার শ্রমিককে আটক করে দুই লাখ টাকা জরিমানা করে উপজেলা প্রশাসন।

গত ৯ আগস্ট সকালে গজারিয়া উপজেলার ষোলআনী এলাকা থেকে মেঘনার জলদস্যু ‘শুটার মান্নান’ হত্যা মামলার অন্যতম পলাতক আসামি জলদস্যু আজিজুর রহমান পলাশ গাজীকে (৩৯) পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় তার কাছ থেকে একটি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি, একটি রামদা ও তিনটি ছেনি দা উদ্ধার করে। 

এর আগে গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি গজারিয়ায় গুলিবর্ষণ, ২২ অক্টোবর মল্লিকেরচরে নৌ-ডাকাত বাবলা নিহত এবং ২৮ ডিসেম্বর কোস্ট গার্ডের অভিযানে লৌহজংয়ে ৫ শ্রমিক আটক করা হয়। 

পর্যেবক্ষকরা বলছেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্বল তদারকি, প্রভাব ও আইনের সীমিত প্রয়োগের কারণেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালীরা ইজারা নিয়ে ক্ষমতার দাপটে ব্যক্তি মালিকানা জমি কেটে নিয়ে বালু উত্তোলনে বৈধতা দেখানোর চেষ্টা করছে। 

তারা দিন-রাত ড্রেজার বসিয়ে ইজারা স্থানের সীমানা অতিক্রম করে মানুষের জমিজমা কেটে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় গত ২৯ জুলাই মুন্সীগঞ্জ সদরের কালিরচর গ্রামবাসীর পক্ষে কাঞ্চন বেপারী জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেন। এ পর্যন্ত ভুক্তভোগী পরিবারগুলো কোনো প্রতিকার পায়নি বলে কাঞ্চন বেপারী জানান। দু'একবার অভিযান চালানোর পর পুনরায় ড্রেজার বসিয়ে বালু কেটে নেয়া হচ্ছে। 

তিনি জানান, প্রশাসন, কোস্ট গার্ড, নৌপুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার যৌথ উদ্যোগে নিয়মিত অভিযান চালালে বা তারা নদীতে তৎপর থাকলে খুন-খারাপির সমস্যার সমাধান হবে হয়তো।

গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার আলম আজাদ জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বে জড়াচ্ছে কয়েকটি পক্ষ। জলদস্যুদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। নদীতে নিয়মিত নৌ পুলিশ ও থানা পুলিশের নজরদারি রয়েছে।

পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার জানান, নদীর অপরাধ দমনে জেলা প্রশাসন, নৌ-পুলিশসহ জেলা পুলিশ একসাথে কাজ করে যাচ্ছে। নদীতে অভিযান অব্যাহত আছে। দু'জন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।

এমএইচ/এমএ
সম্পর্কিত   বিষয়:  মুন্সীগঞ্জ  


LATEST NEWS
MOST READ
Also read
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000.
Phone: PABX- 41053001-06; Online: 41053014; Advertisement: 41053012.
E-mail: [email protected], news©dailyobserverbd.com, advertisement©dailyobserverbd.com, For Online Edition: mailobserverbd©gmail.com
🔝
close