প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হয়েও একটি টল ঘরের অভাবে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে মাদারীপুরের কালকিনি পৌরবাসী। প্রতিদিন কাক ডাকা ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত খোলা আকাশের নিচে রোদ, বৃষ্টি, ঝড় উপেক্ষা করে ক্রেতা-বিক্রেতাদের আনাগোনায় মুখরিত থাকে এই মাছ বাজার।
এই বাজারটি পৌরসভার প্রাণকেন্দ্রে হওয়ায় এখানে প্রতিদিন সহস্রাধিক ক্রেতার সমাগম ঘটে এবং লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ কেনাবেচা হয়। কিন্তু এই বাজারে কোন টল ঘর না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদা পানিতে একাকার হয়ে যায়।
এছাড়াও, গ্রীষ্মের প্রচন্ড রৌদ্রময় পরিবেশে ঘাম ঝরিয়ে চলে বেচা-কেনা। এতে করে ঋণের টাকায় জর্জরিত ব্যবসায়ীরা মাঝে মাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কিন্তু প্রতিদিন বাজারের দোকানিরা মোট অংকের খাজনা দিলেও এর সুফল না পাওয়ার ক্ষোভ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। দ্রুত একটি টল ঘর নির্মাণের দাবি তাদের।
বাজারের মাছ ব্যবসায়ী রুহুল আমীন বলেন, 'আমাদের বাজারে টল ঘর না থাকায় আমরা অনেক সমস্যায় আছি। এই বর্ষা মৌসুমে প্রতিদিনই বাজারে বৃষ্টির পানিতে কাঁদা হয়ে যায়। বৃষ্টির কারণে গত তিন দিন বাজারে আসি নাই। এ কারণে কিস্তির টাকাও পরিশোধ করতে পরিনি। একটি টল ঘর হলে নিয়মিত মাছ বিক্রি করে কিস্তির টাকা পরিশোধ করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভালো থাকতে পারতাম।'
মাংস ব্যবসায়ী সাগীর হাওলাদার বলেন, 'প্রতিদিন ৪০০ টাকা করে খাজনা দেই কিন্তু কোনো প্রকার সুবিধা পাচ্ছি না। রোদ-বৃষ্টিতে আমাদের মাংসের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। একটি টল ঘর হলে আমাদের অনেক উপকার হতো।'
বাজারের ক্রেতা বাবুল বলেন, 'বাজারে নিয়মিত টেন্ডারের মাধ্যমে ইজারা হয়। সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ে। আবার ব্যবসায়ীরা নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করেন।'
আরেক ক্রেতা সালাম বলেন, 'বাজারে প্রতিদিন কোটি টাকার ক্রয়-বিক্রয় হলেও এখানে কোনো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেনা ক্রেতা-বিক্রেতারা। বর্ষায় কাঁদা পানি আর গ্রীস্মে প্রচন্ড গরম মধ্যেই চলে বেচাকেনা। তাই এই মাছ বাজার এবং কাঁচা বাজারে দুটি টল ঘর অতি জরুরি।'
বাজারের ইজারাদার মো. হাসান বলেন, 'একটি টল ঘর নির্মাণের জন্য আবেদন করেছি। আশা করি পৌরসভার পক্ষ থেকে অতিদ্রুত একটি সুব্যবস্থা হবে, যাতে করে ব্যবসায়ী ও ক্রেতা উভয়েই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পায়।'
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং কালকিনি পৌর প্রশাসক সাইফ-উল আরেফিন বলেন, 'ইতিমধ্যে বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। আমরা জায়গাটি পরিদর্শন করে কিভাবে একটি টল ঘর নির্মাণ করা যায় এবং যাতে সেখানে কাঁদা পানি না জমে আমরা সেই ব্যবস্থা দ্রুত গ্রহণ করবো।'
জেএল/এমএ