রাঙ্গামাটিতে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপিত হয়েছে। “আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ভবিষ্যৎ গঠনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সার্থক প্রয়োগ” প্রতিপাদ্যে হাজার হাজার আদিবাসী জনগোষ্ঠী তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে।
শনিবার সকালে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপন কমিটির উদ্যোগে রাঙ্গামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা। প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙ্গামাটির প্রাক্তন সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান। অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলেন শিক্ষক, লেখক ও গবেষক শিশির চাকমা।
আলোচনা সভা শেষে রাঙ্গামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গন থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। আদিবাসী জনগোষ্ঠী ঐতিহ্যবাহী পোশাকে এই শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাঙ্গামাটি শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ আজও নিপীড়ন ও নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মের জয়গানের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ রচিত হলেও পাহাড়ের আদিবাসীরা এখনো শোষণ, বঞ্চনা ও লাঞ্ছনার শিকার।
তিনি আরও বলেন, তরুণ প্রজন্মের হাত ধরে আমরা যে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, তা কতটা রক্ষা করতে পেরেছি, সেটি আমাদের ভেবে দেখতে হবে। আমেরিকা ও রাশিয়া এখন পরাশক্তি; তাদের দৃষ্টি পড়েছে বঙ্গোপসাগর ও মিয়ানমারের দিকে। তাই আমাদের ভাগ্য নিয়ে তারা যেন ছিনিমিনি খেলছে।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু সেই চিঠি লিখলেও মানুষের মনে প্রশ্ন থেকে গেছে—আসলে নির্বাচন হবে কিনা। কারণ আমেরিকা কী চায়, তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। ভারতও পরাশক্তি হতে চায়; তারাও নীরবে-নিভৃতে প্রভাব বিস্তার করছে। আজ বাংলাদেশের জনগণ যেন এক একটি খেলনার মতো পরিণত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আদিবাসী নেতারা অবিলম্বে আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানের দাবি জানান এবং জাতিসংঘ ঘোষিত আদিবাসী বিষয়ক ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরের আহ্বান জানান। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আদিবাসীরা যদি তাদের অধিকারসহ সাংবিধানিক স্বীকৃতি না পান, তাহলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এসআই/আরএন