টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার বীরতারা ইউনিয়নের বালাসুতি এলাকায় নামমাত্র একটি সাইনবোর্ডবিহীন সুতা ও ইলাস্টিক তৈরির কারখানার জেনারেটর ও মেশিনের উচ্চ শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর প্রতিকার চেয়ে তারা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, কারখানার মেশিনের শব্দ এবং জেনারেটরের বিকট শব্দে পুরো পাড়ায় এক ধরনের দূষনীয় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এতে শব্দ দূষণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী গত ১৩ জুলাই ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানা প্রশাসন ও টাঙ্গাইল জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
বালাসুতি এলাকার শাজাহান আলী, মারফত আলী, ইদ্রিস আলী, হুমায়ুন কবীর, শাহীন মিয়া, শিফা বেগম, লাইলী বেগম ও রমিছা বেগমসহ অনেকেই অভিযোগ করে জানান, শফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি অবৈধভাবে, কোনো লাইসেন্স ছাড়াই, একটি সুতার কারখানা গড়ে তুলেছেন। কারখানার জেনারেটর ও মেশিনের শব্দে তারা চরম ভোগান্তিতে আছেন। শিশুরা ঠিকমতো পড়ালেখা করতে পারছে না। এমনকি কেউ কেউ শ্রবণ সমস্যায়ও ভুগছে। রোগীদের কষ্ট সবচেয়ে বেশি।
কারখানাটিতে কোনো সাইনবোর্ড নেই, নেই পরিবেশ অধিদপ্তর বা ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদনপত্র। সরকারি অনুমতি না থাকায় মালিক শফিকুল ইসলাম সাইনবোর্ড লাগাননি বলেও অভিযোগ রয়েছে। তাই অবৈধভাবে গড়ে তোলা এই কারখানাটি দ্রুত বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।
কারখানার দায়িত্বে থাকা ম্যানেজার শহীন মিয়া সাংবাদিকদের জানান, এখানে প্রায় অর্ধশতাধিক নারী শ্রমিক কাজ করেন। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি ট্রেড লাইসেন্স নেয়া হয়েছে, তবে অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই। সাইনবোর্ড না লাগানোর কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমি জানি না, মালিক ভালো জানেন।” তিনি সংবাদটি প্রচার না করার অনুরোধও করেন।
কারখানার সরকারি অনুমোদন বা পরিবেশ ছাড়পত্র আছে কিনা, তা জানতে মালিক শফিকুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো সদুত্তর না দিয়ে সাংবাদিকদের খবর প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন এবং আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহীন মাহমুদ জানান, “আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। জনবসতিপূর্ণ এলাকায় কারখানা স্থাপনের কোনো বিধান নেই। কারখানা পরিচালনায় অবশ্যই সরকারি অনুমতি ও লাইসেন্স থাকতে হবে। এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সায়েম ইমরানকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যদি বৈধ লাইসেন্স না থাকে, তবে দ্রুতই সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
টাঙ্গাইল জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক গণমাধ্যমকে জানান, “আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এইচআর/আরএন