লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে একদিনে তিনজনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। পৃথক দুই ঘটনায় নিহত হয়েছেন এক পুরুষ, এক নারী ও তার শিশু সন্তান। ঘটনার পর এলাকাজুড়ে তৈরি হয়েছে চরম শোক ও উদ্বেগ।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার বামনী ইউনিয়নের পূর্ব সাগরদি গ্রামে একটি সুপারি বাগানের ডোবা থেকে মো. হারুন (৫০) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি ওই গ্রামের আতরেজ্জামানের ছেলে। পরিবার জানায়, সোমবার সকাল থেকে হারুন নিখোঁজ ছিলেন। পরদিন সকালে স্থানীয়রা ডোবায় তার লাশ ভেসে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
এদিকে একই দিনে উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরলক্ষী গ্রামে মা ও শিশুকন্যার মৃত্যুর ঘটনা চরম করুণ রূপ নেয়। স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পরকীয়ার জেরে পারিবারিক কলহের মধ্যে নিজের দুই বছরের শিশুকন্যাকে বিষ খাইয়ে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন তাসলিমা বেগম (৪০)। নিহত শিশু মিতু আক্তার তার ছোট মেয়ে।
তাসলিমার স্বামী সাহাবুদ্দিন মাঝি জানান, তাদের বড় মেয়ে সাবিনা আক্তারের বিয়ের পর থেকে স্বামীর বাড়িতে মনোমালিন্য চলছিল। মেয়েকে পরকীয়া সম্পর্ক থেকে বিরত রাখতে দীর্ঘদিন ধরে মা তাসলিমা চেষ্টা করে আসছিলেন। এনিয়ে মা-মেয়ের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। মঙ্গলবার ভোরে আবারও ঝগড়ার পর তাসলিমা ক্ষুব্ধ হয়ে বাড়ির পাশের ধানক্ষেতে গিয়ে শিশু মিতুকে বিষপান করান এবং নিজেও বিষ খান। স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের উদ্ধার করে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের স্বামী সাহাবুদ্দিন বড় মেয়ে সাবিনাকে দায়ী করে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। তবে অভিযুক্ত সাবিনা আক্তার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দীন ভূঁইয়া জানান, তিনটি মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। হারুনের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই, তবে মুখে বিষ জাতীয় পদার্থের আলামত রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি আত্মহত্যা হতে পারে। অপরদিকে মা ও শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় বিষক্রিয়ার প্রমাণ মিলেছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
ওআরএম/এসআর