পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে তানিয়া বেগম (৩৫) নামে দুই সন্তানের জননী এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যায় মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে মির্জাগঞ্জ থানা পুলিশ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর ডাক্তার মৃত ঘোষণা করলে স্বামী মাহবুব ফকিরসহ দুই সহোযোগী হাসপাতালে লাশ রেখে পালিয়ে যাওয়ায় মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিয়ে এলাকাবাসী ও সচেতনমহলের মধ্যে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
নিহত তানিয়া উপজেলার মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের মনোহরখালী গ্রামের মাহবুব ফকিরের স্ত্রী ও খুলনা জেলার সদর উপজেলার হাজী মহসীন রোডের আবু খান লেনের বাসিন্দা আতিক মল্লিকের মেয়ে ছিলেন।
তানিয়া ও মাহবুব দম্পতির একটি পূত্র (১৮) ও একটি কন্যা (১১) সন্তান রয়েছে।
স্থানীয় গ্রামবাসী ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে তানিয়া বেগমকে মুমূর্ষু অবস্থায় তার স্বামী মাহবুব ফকিরসহ দুই-তিনজন ব্যক্তি মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসেন। জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীর সমস্যা জানতে চাইলে তানিয়া বেগম স্ট্রোক করেছে বলে স্বামী মাহবুব জানান। কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ মেহেদী হাসান তাৎক্ষনিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানান 'রোগী জীবিত নেই' এবং রোগীর গলার নিচে বাম পার্শ্বে কালো একটি দাগ দেখে সন্দেহজনক মনে হলে মির্জাগঞ্জ থানায় সংবাদ দেন।
'রোগী জীবিত নেই' এমন সংবাদ শুনে স্বামী মাহবুব ফকিরের সাথে হাসপাতালে আসা অন্য ২-৩ জন ব্যক্তি তানিয়া বেগমের মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান। সংবাদ পেয়ে মির্জাগঞ্জ থানা পুলিশ হাসপাতালে পৌঁছে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন করার পর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করেন। খবর পেয়ে নিহত তানিয়া বেগমের মা-বাবাসহ স্বজনরা ঐদিন রাতেই রাতেই মির্জাগঞ্জ থানায় উপস্থিত হন।
মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর হাসপাতালে লাশ রেখে স্বামীসহ সহোযোগীরা পালিয়ে যাওয়ার সংবাদ মূহুর্তে ছড়িয়ে পড়লে নিহত তানিয়া বেগম আত্মহত্যা করেছেন নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে? এমন প্রশ্ন নিয়ে এলাকাবাসীর মনে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটন ও অপরাধীকে শনাক্তের দাবী জানান নিহতের ভাই সাগর মল্লিক।
গৃহবধূ তানিয়া বেগমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ করে তানিয়ার ভাই সাগর মল্লিক সাংবাদিকদের বলেন, আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এর সাথে বোন জামাই মাহবুবসহ বাহিরের অন্য কেউ জড়িত থাকতে পারে। আমার বোনের পরিবারের সাথে জমিজমা নিয়ে বাহিরের লোকজনের সাথে কিছুদিন যাবত ঝামেলা চলছিল। আমরা তাদেরকেও সন্দেহ করছি।
মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম জানান, উদ্ধার গৃহবধূ তানিয়া বেগমের গলায় বাম দিকে একটি সন্দেহজনক 'কালো দাগের চিহ্ন' পাওয়া গেছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য পটুয়াখালীর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের মা-বাবাসহ স্বজন ও তার স্বামী বর্তমানে থানায় আছে। তাদের নিকট থেকে তথ্য নিয়ে যাচাই-বাছাই করছি। এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি।
কেবি/ এসআর