গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় কোটি টাকা ব্যয়ে উন্মুক্ত কবর স্থাপন করেছেন প্রবাসী এক যুবক। ব্যতিক্রমধর্মী ও মানবিক এমন উদ্যোগ নিয়েছেন গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কাপাসিয়া গ্রামের প্রবাসী ফারুক ফকির।
ফারুক মনে করেন, আমরা প্রতিদিন জীবনের ব্যস্ততায় এমন ভাবে নিমজ্জিত থাকি যে, মৃত্যুর বাস্তবতা প্রায় ভুলেই যাই। অথচ মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী, প্রত্যেককেই একদিন পৃথিবী ছাড়তে হবে।
তিনি বলেন, 'আমি চাই মানুষ এই কবরগুলো দেখে যেন জীবনের স্বার্থকতা, সময়ের মূল্য ও নৈতিকতা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শেখে। এ জন্যই এই উদ্যোগ।'
ফারুক বলেন, 'গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কাপাসিয়া গ্রামে আমার বাড়ি। বাবা সিরাজুল ইসলাম (ফকির) একজন স্কুল শিক্ষক ছিলেন এবং মা আয়শা আখতার পারভীন একজন গৃহিনী। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে আমি সবার ছোট। ছোটবেলা থেকেই মানুষের জন্য কিছু করার স্বপ্ন দেখতাম। বিদেশে পাড়ি দিয়ে জীবনের প্রয়োজনে অর্থ উপার্জন করি এবং গড়ে তুলি নিজস্ব ব্যবসা। কিন্তু সেই শৈশবের স্বপ্ন আমাকে তাড়িয়ে বেড়াত। অবশেষে বিদেশের উপার্জিত অর্থে এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করি। সেই রাস্তার পাশেই গড়ে তুলি উন্মুক্ত কবরস্থান।'
কাপাসিয়া গ্রামের নওয়াব এন্টারপ্রাইজ মালিক রুবেল মিয়া (৪৫) বলেন, '১০ কাঠা জমির উপর নির্মিত এই উন্মুক্ত কবরস্থানে রাখা হয়েছে প্রকৃত মাপের ছোট ছোট কবর। আগ্রহী কেউ চাইলে কবরের পাশে বসে নিজের মতো করে সময় কাটাতে পারবেন।'
কাপাসিয়া মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ইমাম মাহমুদুল হাসান মারুফ বলেন, ''এটা অত্যন্ত ভালো ও সময়োপযোগী একটি উদ্যোগ। আমি শুনে খুশি হয়েছি। এখন যে কেউ, বিশেষ করে হতদরিদ্ররা, বিনা খরচে এখানে মরদেহ দাফনের সুযোগ পাবে।'
গাজীপুর কোর্টের অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বাবুল বলেন, 'প্রবাসী ফারুকের এই ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। এটি কেবল মানবিক উদাহরণই নয় বরং সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের উপকারে আসবে।'
এনএ/এমএ