রাজশাহীর বাগমারায় ২২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১২৭টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। ফলে এসব বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে পাঠদান চালানো হচ্ছে। এতে পাঠদান এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ২২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১২৭টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। যদিও সহকারী শিক্ষকের ১,০৭৬টি পদ রয়েছে, বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ১,০৪৩ জন। কর্মরত সহকারী শিক্ষকদের প্রায় ৭০ শতাংশই নারী শিক্ষক। এর মধ্যে অনেকেই বর্তমানে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন।
এদিকে সহকারী শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হওয়ায় প্রশাসনিক কাজে তারা ব্যস্ত থাকেন। ফলে তারা যথাযথভাবে পাঠদান করাতে পারেন না। প্রধান শিক্ষক শূন্যতা এবং সহকারী শিক্ষক হিসেবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থাকার কারণে পাঠদান মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতি মাসে বেশ কয়েকজন প্রধান শিক্ষক অবসর গ্রহণ করছেন। গত ৩ জুলাই এক জন বদলিজনিত কারণে এবং দুই জন অবসরজনিত কারণে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হয়। ফলে প্রধান শিক্ষকের শূন্যতা দিন দিন বাড়ছে। এর ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
খোঁজ নেয়া গেলে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক না থাকায় সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। তারা প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকায় শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কম হচ্ছে। অপরদিকে, অন্যান্য সহকারী শিক্ষকরা ইচ্ছেমতো বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করছেন। সকাল ৯টার মধ্যে শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও অধিকাংশ শিক্ষক সময়মতো উপস্থিত হন না এবং নির্ধারিত সময়ের আগেই বিদ্যালয় ত্যাগ করেন।
বান্দাইখাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত কুমার সরকার বলেন, "বিদ্যালয়ের মূল চালিকাশক্তি প্রধান শিক্ষকের হাতে থাকে। প্রধান শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত হলে স্বাভাবিকভাবেই কার্যক্রম ব্যাহত হয়। সরাসরি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ এবং পদোন্নতির ভিত্তিতে নিয়োগ বন্ধ থাকায় এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে।"
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, "শিক্ষক স্বল্পতার বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন মহলে নিয়মিত জানাচ্ছি। নতুন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।"
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল ইসলাম বলেন, "প্রধান শিক্ষকের শূন্যতা সম্পর্কে শিক্ষা অফিসারকে তাগাদা দিয়েছি। পাশাপাশি সকল স্কুলে পাঠদান যথাযথভাবে চলমান রাখতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।"
আরএইচ/আরএন