Sunday | 12 October 2025 | Reg No- 06
Epaper | English
   
English | Sunday | 12 October 2025 | Epaper
BREAKING: ট্রাইব্যুনালের ১৫ অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তা সেনা হেফাজতে      জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান ২ দিন পেছালো      জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কর্মী সমাবেশে উত্তেজনা, ছত্রভঙ্গ করলো পুলিশ       এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার টাকার মধ্যে হওয়া উচিত: জ্বালানি উপদেষ্টা      দু’একজন উপদেষ্টা ও প্রশাসন একটি দলকে ক্ষমতায় নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে: পরওয়ার      এবারের নির্বাচনে আইনের শাসন কাকে বলে দেখাতে চাই: সিইসি      ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে আর্জেন্টিনার দুর্দান্ত জয়      

এক কলেজে ৩ অধ্যক্ষ

Published : Wednesday, 9 July, 2025 at 1:49 PM  Count : 144

নীলফামারীর জলঢাকায় শিমুলবাড়ী সরকারি ডিগ্রি কলেজে এখন তিন জন অধ্যক্ষ। তাদের মধ্যে একজন শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত, অপর দু'জন ভারপ্রাপ্ত। একসঙ্গে তিন জন অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনের ঘটনায় সৃষ্টি হয়েছে প্রশাসনিক ও একাডেমিক অচলাবস্থা। 

জানা গেছে, ২০২১ সালের ৮ আগস্ট কলেজটি জাতীয়করণ হয়। জাতীয়করণের পর থেকে উপাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এতে কলেজের কার্যক্রম ভালোই চলছিল। 

এদিকে, চলতি বছরের ০৮ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে ক্যাডারভুক্ত অধ্যাপক এ কে এম সিদ্দিকুর রহমানকে কলেজটির অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই নিয়োগ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন আব্দুল হান্নান। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ০১ জুন আদালত অধ্যক্ষ পদে এ কে এম সিদ্দিকুর রহমানের পদায়নের আদেশ তিন মাসের জন্য স্থগিত করে এবং আব্দুল হান্নানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন। 

আদালতের নিষেধাজ্ঞা  থাকার পরও এ কে এম সিদ্দিকুর রহমান কলেজে দায়িত্ব পালন করতে থাকেন এবং নতুন করে সহকারী অধ্যাপক অশোক কুমার রায়কে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়ে দেন। ফলে একই কলেজে তিন জন অধ্যক্ষের একজন ক্যাডারভুক্ত, একজন আদালতের নির্দেশে দায়িত্ব পাওয়া এবং অপরজন নতুন করে দায়িত্বপ্রাপ্ত।

বুধবার দুপুরে এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন আদালতের আদেশে দায়িত্বে থাকা অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান। তিনি বলেন, 'আমি ২০২১ সাল থেকে এই কলেজে বিধি মোতাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমার রিটের ভিত্তিতে আদালতের নির্দেশে আবার সেই দায়িত্বই আমাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ ক্যাডারভুক্ত অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান তা মানছেন না।'

তিনি বলেন, 'শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়োগ পাওয়া অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান ইচ্ছাকৃত ভাবে আমাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে কলেজের এক সহকারী অধ্যাপককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েছেন। যা বিধিবহির্ভূত। পাশাপাশি অভিযোগ করেন, আমার জুন মাসের বেতন-ভাতা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। আমি পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।'

সরকার কর্তৃক নিয়োগ পাওয়া ক্যাডারভুক্ত অধ্যক্ষ এ কে এম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, 'সরকারের নির্দেশেই আমি পদায়নপ্রাপ্ত হয়েছি। রিটের কারণে আমার আদেশ স্থগিত হলেও কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রম সচল রাখতে আমি সহকারী অধ্যাপক অশোক কুমার রায়কে দায়িত্ব দিয়েছি।'

তিনি বলেন, 'আব্দুল হান্নান কলেজে নিয়মিত উপস্থিত ছিলেন না, এ জন্য তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।'

বেতন বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, 'তিনি আমাকে ভুয়া অধ্যক্ষ বলেছেন, তাই তার বেতন স্থগিত করা হয়েছে।'

অন্যদিকে, দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক অশোক কুমার রায়ের বক্তব্য নিতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। 

এ ঘটনায় কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা পড়েছেন অনিশ্চয়তায়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, এই কলেজে তিন জন অধ্যক্ষ থাকলে তো কেউ কাউকে মানবেন না। এতে করে অফিসিয়াল কাজেও জটিলতা তৈরি হচ্ছে।

মইনুল হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী জানায়, 'ক্লাস ঠিকমতো হচ্ছে না। বিভিন্ন কাজে অনুমোদনের জন্য একজনের কাছে গেলে তিনি আরেকজনের কাছে পাঠান। এমন পরিস্থিতিতে আমরা দিশেহারা।'

এদিকে, কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের ছুটি অনুমোদন, বিল-ভাউচারে সই, শিক্ষক নিয়োগ, পরীক্ষার ফর্ম পূরণসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে অচলাবস্থা। বিভিন্ন বিষয়ের ফাইল কোন অধ্যক্ষের কাছে যাবে, কার সই কার্যকর- তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা।

এক কর্মচারী বলেন, “তিন জন তিন ভাবে নির্দেশ দেন। আজ এক স্যারের কথায় কাজ করলে, কাল আরেকজন সেটি বাতিল করেন। কী করবো, বুঝে উঠতে পারি না।”

কলেজের একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, তিন জন অধ্যক্ষ আলাদা করে প্রশাসনিক সভা ডাকেন। একজনের সিদ্ধান্ত আরেকজন মানেন না। এতে শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি বেড়েই চলেছে।

এক শিক্ষার্থী বলেন, “ভর্তি হতে গিয়ে দুই জায়গা ঘুরতে হয়। একজন বলেন, উনার অফিসে আসো, আরেকজন বলেন, ওটা অবৈধ। আমরা তো পড়াশোনা করতে এসেছি, এসব ঝামেলা কেন?”

এ অবস্থায় স্থানীয় শিক্ষানুরাগী, অভিভাবক ও সচেতন মহল গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, “জাতীয়করণ মানে উন্নয়ন, কিন্তু এখানে সেটা উল্টো। তিন জন অধ্যক্ষের ক্ষমতার লড়াইয়ে শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে। এটা বন্ধ হওয়া জরুরি।”

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তাহের মো. কামরুল হাসান বলেন, “বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এইচএস/এমএ
সম্পর্কিত   বিষয়:  নীলফামারী   জলঢাকা  


LATEST NEWS
MOST READ
Also read
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000.
Phone: PABX- 41053001-06; Online: 41053014; Advertisement: 41053012.
E-mail: [email protected], news©dailyobserverbd.com, advertisement©dailyobserverbd.com, For Online Edition: mailobserverbd©gmail.com
🔝
close