রাজশাহীর পবায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক অ্যাম্বুলেন্স চালকের বাড়িতে হামলা এবং কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে মো. কচি (৩৫) নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। হামলার সময় ওই ব্যক্তি নিজেকে জেল পুলিশের লোক বলে পরিচয় দেন বলে জানা গেছে। তবে তিনি কোন কারাগারে চাকরি করেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় পবা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ব্যক্তির বাবা। পুলিশ বলছে, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত রোববার পবা থানায় লিখিত অভিযোগ দেন আব্দুল হাকিম (৭০) নামের এক ব্যক্তি। তার বাড়ি উপজেলার দুয়ারি মধ্যপাড়া গ্রামে। এর আগে গত শনিবার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিন দফা তার বাড়িতে হামলা হয়। এ সময় তার ছেলে গোলাম কিবরিয়া জনির (৩৫) মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত করা হয়। এতে জখম হন অ্যাম্বুলেন্সচালক জনি।
অভিযোগে বলা হয়, পবার নওহাটা কলেজ মোড় নতুনপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. কচি (৩৫), তার বাবা মো. আয়নাল (৬০), চাচা মো. মাহাবুল (৫০) ও দুয়ারি উত্তরপাড়া গ্রামের মো. মোতালেব (৪৫) এ হামলা করেছেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত শনিবার বেলা ২টার দিকে আব্দুল হাকিম বাইসাইকেল নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলছিলেন। তখন বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন অভিযুক্ত কচি। এ সময় হাকিম তাকে সাবধানে চালানোর পরামর্শ দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কচি তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং মারধরের জন্য তেড়ে আসেন। এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। তবে কিছুক্ষণ পর কচির নেতৃত্বে আরও কয়েকজন হাকিমের বাড়িতে হামলা চালান। এ সময় তারা দরজা-জানালায় ইট-পাটকেল ছোড়েন এবং হত্যার হুমকি দেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তাঁরা আবারও আসেন এবং বাইরের বারান্দায় রাখা হাকিমের বাইসাইকেলটি ভেঙে দেন। পরে রাতে দিকে তৃতীয় দফায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়। এ সময় হাকিমের ছেলে গোলাম কিবরিয়া জনিকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে নিয়ে কচি তার মাথায় চায়নিজ কুড়ালের উল্টো দিক দিয়ে আঘাত করেন। অন্য হামলাকারীরা হাঁসুয়া, লোহার রড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এতে জনির মাথা ফেটে রক্তাক্ত হয়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লাগে।
ভুক্তভোগী আব্দুল হাকিম বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনায় আমার বাড়িতে তিন দফা হামলা হয়। হামলার সময় কচি বলছিল যে তিনি জেল পুলিশের চাকরি করেন। তার কিছুই করা যাবে না।’
এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত কচির মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ‘রং নম্বর’ বলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আহত অবস্থায় জনি থানায় এসেছিল। আমি তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠাই। পরে তার বাবা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরএইচএফ/এসআর