পবিত্র ঈদুল আজহার জামাতের জন্য প্রস্তুত দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ঈদগাহ, দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ বড় ময়দান। আগামী শনিবার (৭ জুন) সকাল সাড়ে ৮টায় এখানে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন মাওলানা মোঃ মাহফুজুর রহমান।
জানা গেছে, গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানের আয়তন ২১.৯৯ একর। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকেই এখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে এখানে বড় কোনো মিম্বর ছিল না। ২০১৫ সালে দিনাজপুর জেলা পরিষদের উদ্যোগে মিনার নির্মাণের পরিকল্পনা ও অর্থায়ন করা হয়। ২০১৭ সালে নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়।
৫২ গম্বুজবিশিষ্ট মিনার নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। গম্বুজগুলোর দুই পাশে রয়েছে দুটি ৬০ ফুট উচ্চতার মিনার, এবং মাঝখানে দুটি ৫০ ফুট উচ্চতার মিনার। ঈদগাহের প্রধান গম্বুজ বা মেহরাবের উচ্চতা ৪৭ ফুট। এছাড়া ৫১৬ ফুট দৈর্ঘ্যের ৩২টি আর্চ নির্মাণ করা হয়েছে। পুরো মিনার সিরামিক দিয়ে তৈরি এবং প্রতিটি গম্বুজ ও মিনারে স্থাপন করা হয়েছে বৈদ্যুতিক লাইটিং। রাতের বেলায় পুরো ঈদগাহ ময়দান আলোকিত হয়ে ওঠে।
২০১৭ সাল থেকে এখানে ঈদের জামাতে অংশ নিচ্ছেন দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত হাজারো মুসল্লি। এবারও ঈদুল আজহার জামাতের জন্য প্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
মুসল্লিদের সুবিধার্থে স্থাপন করা হয়েছে ৩০০টি ওজুখানা ও ৪০টি টয়লেট। পাঁচটি স্থানে খাবার পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী—পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব-এর সমন্বয়ে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে ৫০টি সিসিটিভি ক্যামেরা এবং দুটি ওয়াচ টাওয়ার। দিনাজপুর শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টেও নজরদারির জন্য বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।
বুধবার দুপুরে ঈদগাহের প্রস্তুতি পরিদর্শন করেন দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ রফিকুল ইসলাম। তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “এশিয়ার সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ময়দানে মুসল্লিরা যেন নিরাপদ ও সুষ্ঠুভাবে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেন, সে জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর পৌরসভার প্রশাসক ও ডিডিএলজি মোঃ রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদসহ জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এএইচ/আরএন