Monday | 27 October 2025 | Reg No- 06
Epaper | English
   
English | Monday | 27 October 2025 | Epaper
BREAKING: মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি      মতিঝিল থেকে শাহবাগ পর্যন্ত মেট্রো চলাচল শুরু      ডেঙ্গুতে একদিনে আরও ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১,১৪৩ জন      মেট্রোরেল দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবার পাবে ৫ লাখ, থাকবে চাকরির সুযোগ      উত্তরা-আগারগাঁও মেট্রো চলাচল শুরু      একজনের সাতটির বেশি সিম নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা      মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ      

ভোলায় ঝড়ে ৫ হাজার ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত

চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন বিধ্বস্ত পরিবারগুলো

Published : Sunday, 1 June, 2025 at 12:27 PM  Count : 241

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলায় শনিবারও বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করেছে। সকাল থেকেই মেঘলা আকাশে ঘোমট আবহাওয়া বিরাজ করে। দুপুরের পর জেলার ঢাল চরসহ বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। 

অপরদিকে, ভোলায় অস্বাভাবিক ভাবে নদীর পানির চাপ ও ঝড়ো বাতাসে কয়েক হাজার ঘর-বাড়ি ও অসংখ্য গাছপালা বিধ্বস্ত হয়েছে। শুক্রবারের ঝড় ও অতি জেয়ারের পানি আঘাতে জেলার দূর্গম চরাঞ্চলের প্রায় ৫ হাজার ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ভোলার চরফ্যাশন, মনপুরা ও তজুমদ্দিন উপজেলায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক পরিবার গৃহহারা হয়েছে। তারা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে। 

এদিকে, পানির তোড়ে ভেসে গেছে সহস্রাধিক গবাদী পশু। চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলায় এখনো তিন হাজার পরিবার জোয়ার এলেই পানিবন্দী হয়ে পড়েন। এছাড়াও, ভোলার লালমোহন ও তজুমদ্দিন উপজেলার দুই স্থান দিয়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ঝড়ো বাতাসে ইলিশা লঞ্চ ঘাটের তিনটিসহ পাঁচটি পন্টুন বিধস্ত হয়েছে।

 

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার সাগর মোহনার ঢালচর, চর কুকরি-মুকরি ও মুজিবনগর ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঢালচরের অধিকাংশ ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চর কুকরি-মুকরির চর পাতিলা এলাকা ও মুজিবনগর ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ তিন ইউনিয়নে প্রায় ৭-৮ শতাধিক গরু-ছাগল পানিতে ভেসে গেছে। 

চরফ্যাশনের ঢাল চর ইউনিয়নের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম জানান, সেখানে শুক্রবার দুপুরে আবার জোয়ারের পানিতে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। বহু ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে অনেক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। 

মোহাম্মদিয়া আরাবিয়া কাওমি মাদ্রাসা বিধ্বস্ত হয়। মাদ্রাসাটির টিনের চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা আমির হোসেন।

লালমোহন উপজেলার লর্ড হার্ডিঞ্জ, রমাগঞ্জ, ধলীগৌরনগর, চরভূতা ও পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ২০টি বসতঘর পুরোপুরি বিধ্বস্ত হওয়ার পাশাপাশি অন্তত ৫০০টি বসতঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া, উপজেলার লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব সৈয়দাবাদ এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে দুটি গ্রাম ও অতিবৃষ্টিপাত এবং জোয়ারের পানির কারণে চর কচুয়াখালী এবং পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। 

মনপুরা উপজেলার কলাতলির চরসহ বাঁধের বাইরের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এতে প্রায় ৩ হাজার ঘর-বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশ কিছু গবাদী পশু ভেসে গেছে।

 

 

চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসনা শারমিন মিথি সাংবাদিকদের জানান, চরফ্যাশনের তিনটি ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ৭-৮ শতাধিক গবাদিপশু ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য ৫০০ প্যাকেট খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

মনপুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিখন বনিক সাংবাদিকদের জানান, মনপুরার কলাতলি ইউনিয়নে বাঁধ না থাকায় পানিতে সেখাকার ঘর-বাড়ি তলিয়ে গেছে। এছাড়াও বাঁধের বাইরে কিছু কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারের পানিতে তিন হাজার ৪০০ ঘর-বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এখনো পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্তের খবর পাওয়া যায়নি।

ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদ দৌলা জানান, মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারে ভোলার লালমোহনের সৈয়দাবাদ ও তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের স্লুইসগেট এলাকায় বেড়িবাঁধ ছুটে যায়। এতে লালমোহনে ২০ মিটার ও তজুমদ্দিনে ১৫ মিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। লালমোহনের ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কার করা হয়েছে এবং তজুমদ্দিন উপজেলার বাঁধ সংস্কার কাজ চলছে।

এদিকে, মেঘনার মধ্যবর্তী চরাঞ্চলগুলোতে ঘর-বাড়ির ক্ষতির পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক মহিষ ভেসে যাওযার খবর পাওয়া গেছে। জোয়াজের পানিতে সহস্রাধিক পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। ঝড় জলোচ্ছ্বাসের কবল থেকে ভোলাকে রক্ষায় টেকসই বাঁধের দাবি জানান তজুমদ্দিনের ক্ষতিগ্রস্তরা।

জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলের ঝড় ও জোয়ারের পানিতে ৫ হাজার ২০০ ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২০৪টি ঘর। এর মধ্যে চরফ্যাশনের ঢালচর, চর পাতিলা, কুকরী মুকরীতে ক্ষয়ক্ষতি বেশি। 

তিনি জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। দূর্গত এলাকায় শুকনো খাবার বিতরণ করা শুরু হয়েছে। 

এএম/এমএ
সম্পর্কিত   বিষয়:  ভোলা   ঝড়   ক্ষতিগ্রস্ত  


LATEST NEWS
MOST READ
Also read
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000.
Phone: PABX- 41053001-06; Online: 41053014; Advertisement: 41053012.
E-mail: [email protected], news©dailyobserverbd.com, advertisement©dailyobserverbd.com, For Online Edition: mailobserverbd©gmail.com
🔝
close