শেরপুরে গত বছরের ৪ অক্টোবরের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়া ১৬০টি অসহায় পরিবার ‘আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন’ থেকে নির্মিত ঘর পেয়েছে। মানবকল্যাণে নিবেদিত এই সেবামূলক প্রতিষ্ঠানটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে।
সোমবার (২৬ মে) সকালে ঝিনাইগাতী উপজেলার অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে উপকারভোগীদের মাঝে ঘরের প্রতীকী চাবি হস্তান্তর করেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মানবসেবা বিভাগের প্রধান মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, প্রজেক্ট এক্সিকিউটিভ মো. জোবায়ের ইবনে কামাল, ‘রক্ত সৈনিক বাংলাদেশ’ শেরপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুল ইসলাম এবং ইউপি সদস্য মো. জাহিদুল হক মনির প্রমুখ।
ঘর পেয়ে ঝিনাইগাতী উপজেলার বাসিন্দা দিপঙ্কর হাজং বলেন, “বন্যায় সব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় এবং আপনাদের সহযোগিতায় এই ঘর পেয়ে আমাদের পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই ফিরে পেয়েছি। এখন আমরা খুব খুশি।”
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রজেক্ট এক্সিকিউটিভ মো. জোবায়ের ইবনে কামাল জানান, গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় শেরপুর জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে তিন হাজার পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ১৯৯টি পরিবারকে পরিবারপ্রতি ৪০ হাজার টাকা করে মোট ৭৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। যেসব পরিবারের ঘর সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, তাদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে মোট ১৬০টি সেমিপাকা ঘর। এর মধ্যে ঝিনাইগাতীতে ১০৫টি, নালিতাবাড়ীতে ৪৯টি, নকলায় ২টি এবং শেরপুর সদর উপজেলায় ৪টি ঘর দেওয়া হয়েছে।
ঘর নির্মাণের দায়িত্বে ছিল ‘ঢাকা ভার্টেক্স ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড’ এবং ‘শামীম ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড’—আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ও স্বেচ্ছাসেবীদের তত্ত্বাবধানে কাজ সম্পন্ন হয়।
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, “জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে মানুষকে সাহায্য করার চেষ্টা করে যাচ্ছি আমরা। মানুষের মধ্যে তিনিই উত্তম, যিনি মানবতার কল্যাণে কাজ করেন। আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই আমরা এই কাজ করছি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৬০টি পরিবারকে ঘর দেওয়ার মাধ্যমে আজকের এই কার্যক্রমের সফল সমাপ্তি ঘটলো। যারা এই মহান উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন, আল্লাহ তাঁদের উত্তম প্রতিদান দিন।”
জেএইচ/আরএন