মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞানচর্চা ও সৃজনশীলতার কেন্দ্র। শিক্ষক ও গবেষকদের উচিত নিয়মিত গবেষণায় নিজেদের যুক্ত রাখা এবং তা শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া। ‘গবেষণা উৎসব ২০২৫’ কেবল একটি আনুষ্ঠানিক আয়োজন নয় বরং এটি উপকূলীয় জীবনের সংকট-সম্ভাবনা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই গবেষণাভিত্তিক চিন্তার এক প্রাণবন্ত সূচনা।'
রোববার পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত ‘গবেষণা উৎসব ২০২৫’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘Research for Coastal Resilience এমন প্রতিপাদ্যে উপকূলীয় অঞ্চলের সংকট, সম্ভাবনা ও টেকসই উন্নয়ন নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দিনব্যাপী এই উৎসবের আয়োজন করে ‘পবিপ্রবি রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার’।
উপদেষ্টা বলেন, 'পবিপ্রবির ইতিহাসে এ আয়োজন এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল। যা আগামী দিনে উপকূলীয় বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের গবেষণাভিত্তিক রূপরেখা নির্মাণে সহায়ক হবে।'
পবিপ্রবি রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মামুন-উর-রশিদের সভাপতিত্বে ও এফবিএ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. সুজাহাঙ্গীর কবির সরকারের পরিচালনায় উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মাসুমা হাবিব, পবিপ্রবির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এস. এম. হেমায়েত জাহান এবং সিনিয়র প্রফেসর মো. হামিদুর রহমান।
ভিসি প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, 'শিক্ষকরা কেবল শ্রেণিকক্ষে শিক্ষাদানেই সীমাবদ্ধ থাকবেন না, বরং নিয়মিত গবেষণার মধ্য দিয়ে সমাজ ও জাতির উন্নয়নে অবদান রাখবেন। অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমাদের শিক্ষকেরা ইতোমধ্যে নানাবিধ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পবিপ্রবি এই বছরই প্রথমবার গবেষণা উৎসব আয়োজন করে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।'
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মাসুমা হাবিব বলেন, 'আমরা একটি জ্ঞাননির্ভর, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চাই। দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে অপার সম্ভাবনা। গবেষণার মান অনেক উচ্চ পর্যায়ের- যা অত্যন্ত সন্তোষজনক। আশা করছি, শিগগিরই পবিপ্রবি ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্স’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।'
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি প্রো ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এস. এম. হেমায়েত জাহান বলেন, 'গবেষণার গুণগত মান ও সমাজে প্রযোজ্যতা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। এ উৎসব পবিপ্রবিকে উপকূলীয় গবেষণার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করবে।'
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিনসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
উৎসবে ইউজিসির বিশেষ অনুদানে ২০২২-২৩ অর্থবছরের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদের ১০টি গবেষণা প্রকল্প এবং ‘পবিপ্রবি রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার’-এর দুটি বিশেষ প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়। উপকূলীয় অঞ্চলের সমসাময়িক সমস্যা, সম্ভাবনা এবং টেকসই উন্নয়নকে ঘিরে এগুলো ছিল মূলত ব্যবহারিক ও ক্ষেত্রভিত্তিক গবেষণা- যা শিক্ষার্থীদের গবেষণার প্রতি আগ্রহী করে তোলে।
উৎসব শেষে নির্বাচিত গবেষণা প্রতিবেদন নিয়ে একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ এবং একটি সাংগঠনিক প্রতিবেদন প্রস্তুতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গবেষণা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় গবেষকদের হাতে সম্মাননা স্মারক, ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়।
এমপি/এমএ