মাগুরার চাঞ্চল্যকর শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। শনিবার মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
এছাড়া, বাকি তিন আসামি এ মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন।
অভিযোগ গঠন বা বিচার শুরুর ২১ দিনের মাথায় আলোচিত এই মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হলো। ঘটনার মাত্র দুই মাস ১১ দিনের মাথায় এই মামলার রায় হয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার (১৩ মে) বেলা ১১টার দিকে মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান এ দিন নির্ধারণ করেন।
ওই দিন মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল এ তথ্য জানান।
এর আগে গত ০৭ মে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। ওই দিন শিশুটির ময়নাতদন্তের দায়িত্বে থাকা দু'জন চিকিৎসক ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন।
গত ১৩ মার্চ ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আছিয়া। এর আগে মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গিয়ে ০৬ মার্চ ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি। ঘটনার পর প্রথমে তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল এবং পরে ফরিদপুর ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটায় নেওয়া হয় ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে।
ধর্ষণের ঘটনায় শিশুটির মা আয়েশা আক্তার ৮ মার্চ শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখ, শাশুড়ি জাহেদা বেগম, বোন জামাই সজিব শেখ এবং সজিবের বড় ভাই রাতুল শেখকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় অভিযুক্ত চার আসামিই পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। তাদের উপস্থিতিতেই চলছে বিচারিক কার্যক্রম।
এর আগে ০৬ মার্চ শিশুটির ধর্ষণের ঘটনার খবর প্রচার হলে মাগুরাসহ সারাদেশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। সড়ক অবরোধ, থানা ও আদালত ঘেরাও করে সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে অপরাধীর শাস্তি দাবি করেন সর্বস্তরের মানুষ। স্থানীয় আইনজীবীরাও এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার দাবির পাশাপাশি আসামিপক্ষকে কোনো প্রকার আইনি সহায়তা না দেওয়ার ঘোষণা দেন।
সরকারের পক্ষ থেকেও মামলাটিকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দায়িত্বরত সরকার পক্ষের আইনজীবীকে সহায়তা দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিযুক্ত স্পেশাল প্রসিকিউটার অ্যাডভাইজার (এটর্নি জেনারেল পদমর্যাদা) অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। একইসঙ্গে মামলার কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে আসামিপক্ষে সোহেল আহমেদ নামে একজন আইনজীবীকে নিয়োগ করা হয়।
এমএ