ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস সনদে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ এনে কক্সবাজার বিআরটিএ জেলা কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (৭ মে) দুপুর ১২ টায় দুদকের জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের একটি টিম এ অভিযান চালায়। দুদক টিম বিআরটিএ কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক উথোয়াইনু চৌধুরী'র সাথে বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে কথা বলেন এবং ডকুমেন্ট যাচাই করেন।
এসময় অতিরিক্ত টাকা নিয়ে লাইসেন্স করে দেওয়া এবং নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ পেয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সহকারী পরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি বলেন, 'কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে কিছু অসংগতি পেয়েছি। কিছু নথি জব্দ করেছি এবং এগুলো যাচাই করা হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'ড্রাইভিং লাইসেন্স'র জন্য অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ ছিল। কয়েকজন ভুক্তভোগীকে সরাসরি ফোনে কল দিয়ে ঘটনার সত্যতা যাচাই করা হয়েছে এবং প্রমানও মিলেছে।'
অভিযান চলাকালে আনিসুর রহমান নামে একজন জানান, 'তিনি পঞ্চম শ্রেনীর প্রত্যায়ন পত্র দিয়েছিলেন। তার ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু দুদকের অভিযানে দেখা যায়, তিনি অষ্টম শ্রেণি পাশ। বিষয়টি নিয়ে তুমুল তর্ক হয়।
আরেকজন অভিযোগকারী মো ইউসুফ বলেন, তার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে দালালের মাধ্যমে খরচ হয়েছে ১৬ হাজার টাকা। তাৎক্ষণিক দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের এক সদস্য ছদ্মনামে একজন ফোনে কল দেন। অপরপ্রান্ত থেকে রিসিভ করে বলেন তিনি গাড়ি চালাচ্ছেন। আবার জানতে চাওয়া হয় একটি লাইসেন্স'র ব্যাপারে। তিনি দুদকের ও-ই কর্মকর্তাকে বলেন, আগে ফরম পূরণ করে ১ হাজার জমা দেন। তারপর বলবো।
ড্রাইভিং লাইসেন্সের পূর্বশর্ত হল- লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা। আবেদনকারীকে ন্যূনতম ৮ম শ্রেণি পাস হতে হবে। অপেশাদার লাইসেন্সের জন্য ১৮ বছর এবং পেশাদার লাইসেন্সের জন্য ২১ বছর হতে হবে। আবেদনকারীকে মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে।
কয়েকজন গ্রাহক বলেন, সরকারি সেবায় দালাল বা মধ্যস্থতা যারা করেন, তাদের অসাধু মানসিকতা যেমন আছে, তেমনি আমরা যারা গ্রাহক আমাদের দোষও কম নয়। নানা ঘাটতি বা অসঙ্গতি নিয়েই আমরা লাইসেন্স করে ফেলতে চাই। এটা কিন্তু ঠিক নয়।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, নিয়মবহির্ভূত উপায়ে লাইসেন্স করার মানসকিতা আমাদের তাড়িয়ে বেড়ায়। এটিই দালালদের সবচেয়ে বড় পুঁজি।
তিনি বলেন, কিছু ফাইল জব্দ করেছি এবং এগুলো যাচাই করা হবে। কোন ত্রুটি পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
অভিযানের প্রসঙ্গে বুধবার সন্ধ্যায় বিআরটিএ কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক উথোয়াইনু চৌধুরী'র সাথে যোগাযোগ করা হলে মুঠোফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গতঃ বুধবার একই সময়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস সনদে ঘুষ লেনদেনসহ দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য রোধে দেশের ৩৫টি বিআরটিএ (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ) কার্যালয়ে একযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এএইচএসইউ/এসআর