পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চিকনিকান্দি ইউনিয়নের দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছাত্রীকে অপহরণ করে ১০ মাস ধরে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভোক্তভোগী পরিবার।
এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা তুলে নিতে নির্যাতিতার পরিবারকে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরিবারের নিরাপত্তার দাবিতে রবিবার রাতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীর বাবা।
লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগীর বাবা জানান, দীর্ঘদিন ধরে আকাশ নামের এক ছেলে তার মেয়েকে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। মেয়ে রাজি না হওয়ায় গত বছরের ২০ এপ্রিল স্কুলে যাওয়ার পথে মেয়েটিকে জোরপূর্বক অপহরণ করা হয়। মেয়ে অপহরণ হওয়ার পরে স্থানীয় রাজনৈতিক মানুষদের কাছে মেয়েকে ফিরে পাওয়ার জন্য ছোটাছুটি করায় উল্টো তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেয়া হয়েছে। তবে কে বা কারা অপহরণ করেছে তা জানলেও মেয়ের প্রাণনাশের ভয়ে আইনগতভাবে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি তিনি। অপহরণের দীর্ঘদিন পর তার মেয়ের খোঁজ পেয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা বশির কাজীর কাছে গেলে তিনি ফয়সালার শর্ত হিসেবে দুই লক্ষ টাকা দাবি করেন। এক লক্ষ টাকা প্রদান করার পরও মেয়েকে ফেরত না দিয়ে বরং তাকে মারধর করেন। শেষ পর্যন্ত গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বসবাসরত তার বোনের সহায়তায় নারায়ণগঞ্জ থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। এরপর গত ৩ মার্চ পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি পিটিশন কেস দাখিল করেন তিনি। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশনায় গলাচিপা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একই এলাকার কৃষ্ণকান্ত সরকারের ছেলে আকাশ সরকার (২১) সহ মোট ৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা করার পরে তিনি ও তার পরিবার বর্তমানে আরো বেশি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে গনমাধ্যম কর্মীদের কাছে অভিযোগ করেন।
তিনি আরো বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালী ও চিকনিকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বশির কাজী, মাহামুদুল হাসান বশির, মামুন গাজী, মোস্তাফিজ গাজী মামলাটি তুলে নিতে চাপ দেন এবং তা না মানলে বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে ধ্বংস করার ও শরীরের ক্ষতি করার হুমকি দেন।
তিনি বলেন, "আমি ও আমার পরিবার চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। এখনো বিচার পাইনি, বরং প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকির শিকার হচ্ছি। প্রশাসনের কাছে আমার মেয়ের সম্ভ্রমহানির সুষ্ঠু বিচার ও পরিবারের নিরাপত্তা দাবি করছি।"
অভিযোগের বিষয়ে বিএনপি নেতা বশীর কাজীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আমার নামে যেসব অভিযোগ করেছে সবকিছু মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।"
এ বিষয়ে গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আশাদুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, ছেলেকে গ্রেপ্তার করে কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। মেয়ের মেডিকেল টেস্ট করা হয়েছে। রিপোর্ট আসলে সবকিছু বোঝা যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পিএম/এসআর
