প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, “আমাদের মূল উদ্দেশ্য শিশুদের মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা। যদি শিশুকে ভাষা ও গণিতে দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারি, তাহলে সে মানবিক জ্ঞানভাণ্ডার অর্জনে সক্ষম হবে এবং স্বাধীনভাবে জ্ঞান আহরণ করতে পারবে। শিশুকে সাক্ষর ও সক্ষম করে তুলতে পারলে তার সামাজিক অবস্থান পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি হবে। শিশুকে সাক্ষর করে তোলা মানেই সামাজিক বৈষম্য নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষাখাতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
উপদেষ্টা আজ (শনিবার) সকালে মাগুরা জেলা অডিটোরিয়ামে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস আয়োজিত প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে জেলার বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে শিশুদের সাক্ষর ও সক্ষম করে তোলা। এজন্য শিক্ষকদের প্রয়োজন। শিক্ষকদের সমস্যাগুলো সমাধানের দায়িত্ব আমাদের। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে শিক্ষকদের সমস্যার সমাধানে আপনাদেরও কিছু ভূমিকা রয়েছে—আপনারা যদি নীতিনির্ধারকদের এই ধারণা দিতে পারেন যে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মানসম্মত শিক্ষা কার্যক্রম চলছে, তাহলে তারা আপনাদের দাবিগুলোর প্রতি সহজেই সাড়া দেবেন।”
উপদেষ্টা আরও বলেন, “সত্যি কথা বলতে কি, মানুষের ব্যক্তিত্ব গড়ে ওঠে অন্য আরেকজন মানুষের ব্যক্তিত্বকে অনুসরণ করে। আপনি নিজেই ভাবুন—এই যে আপনি বড় হয়ে উঠলেন, সেখানে কার কার প্রভাব ছিল? যাদের আপনি আজও ভুলতে পারেন না। শিক্ষকদের এমন একটি সুযোগ রয়েছে—আপনারা একজন শিশুর ব্যক্তিত্বে এমনভাবে ছাপ রেখে যেতে পারেন যে, আপনাদের উপস্থিতি সে বয়ে বেড়াবে আজীবন। এমনকি আপনার মৃত্যুর পরেও আপনি তার ভেতরে জীবিত থাকবেন।”
মাগুরা জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন—প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পিইডিপি-৪) মো. আতিকুর রহমান, মাগুরা সরকারি মহিলা কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ, উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইনস্ট্রাক্টর অপূর্ব মণ্ডল, সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. তৌহিদুর রহমান, প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন, জিল্লুর রহমান, শাহনাজ পারভীন প্রমুখ।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন—প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. হামিদুল হক, খুলনা বিভাগের উপপরিচালক ড. মো. শফিকুল ইসলাম, উপপরিচালক (প্রাক-প্রাথমিক ও একীভূত শিক্ষা) মো. জয়নাল আবেদীন এবং মাগুরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আমিরুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, মাগুরা জেলায় বর্তমানে ৫০২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
উপদেষ্টা পরে মাগুরা পিটিআই অডিটোরিয়ামে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস আয়োজিত সরকারি প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের ‘ট্রেনিং অন প্রকিউরমেন্ট ই-জিপি’ সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। বিকেলে তিনি মাগুরা জেলা অডিটোরিয়ামে জেলা প্রশাসন আয়োজিত মা সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এসএস/আরএন