যশোরের চৌগাছায় এমবিবিএস ডিগ্রি না থাকা সত্ত্বেও ডাক্তার পদবী ব্যবহার এবং অপারেশন থিয়েটারে রোগী অপারেশনসহ রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগে পল্লবী ক্লিনিকের মালিক মিজানুর রহমানকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে সহকারী কমিশনার প্রকৌশলী তাসমিন জাহানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত ওই ক্লিনিকে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় যশোরের সিভিল সার্জন ড. মাসুদ রানা, চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড. আহসানুল মিজান রুমী, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ড. রেহেনেওয়াজসহ যশোর সিভিল সার্জন অফিস ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আদালত পরিচালনাকালে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, তিনি ডাক্তার না হয়েও ডাক্তার পদবী ব্যবহার করে রোগীদের প্রেসক্রিপশন দেন, রোগী দেখেন এবং অপারেশন থিয়েটারে অপারেশন করেন। এর জন্য তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
এ ঘটনার পর আদালত পাশের ‘মায়ের দোয়া’ ক্লিনিকেও অভিযান চালায়। সেখানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ যন্ত্রপাতি দিয়ে প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা ও অপারেশন থিয়েটার পরিচালনা করার অভিযোগে ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয় এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে দেওয়া হয়।
যশোর সিভিল সার্জন ও চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, পল্লবী ক্লিনিকের মালিক মিজানুর রহমান ডাক্তার না হয়েও দীর্ঘদিন ধরে রোগী দেখছেন, প্রেসক্রিপশন দিচ্ছেন এবং ভূয়া পদবী ব্যবহার করছেন। এর আগে একাধিকবার তাকে ভ্রাম্যমান আদালত জরিমানা করেছে এবং ডাক্তার পদবী ব্যবহার করে তার প্রেসক্রিপশন প্যাড পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া, তিনি ১০ শয্যার অনুমোদন নিয়ে ক্লিনিক চালু করে নিয়মিত ৪০-৫০ জন সিজারিয়ান রোগী ভর্তি রেখে নিজেই চিকিৎসা প্রদান করেন।
অন্যদিকে, ‘মায়ের দোয়া’ ক্লিনিকে কিছুদিন আগে ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতি রোগী মারা যান। দুটি ক্লিনিকের বিরুদ্ধেই স্থানীয় রোগী ও তাদের স্বজনদের নানা অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রকৌশলী তাসমিন জাহান বলেন, “অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মেয়াদ উত্তীর্ণ যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ক্লিনিক পরিচালনা করায় এলাকার মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ছিল। অন্যদিকে, পল্লবী ক্লিনিকের মালিক নিজের নামে ভূয়া পদবী ব্যবহার করে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। এজন্য ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে একটি ক্লিনিক সিলগালা করা হয়েছে এবং অপর ক্লিনিকের মালিকের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।”
এসকে/আরএন