Monday | 27 October 2025 | Reg No- 06
Epaper | English
   
English | Monday | 27 October 2025 | Epaper
BREAKING: মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি      মতিঝিল থেকে শাহবাগ পর্যন্ত মেট্রো চলাচল শুরু      ডেঙ্গুতে একদিনে আরও ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১,১৪৩ জন      মেট্রোরেল দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবার পাবে ৫ লাখ, থাকবে চাকরির সুযোগ      উত্তরা-আগারগাঁও মেট্রো চলাচল শুরু      একজনের সাতটির বেশি সিম নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা      মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ      

মুমিনিনদের রমজান যেভাবে কাটত

Published : Wednesday, 26 March, 2025 at 3:18 PM  Count : 233
 

 

হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর স্ত্রীরা হলেন উম্মুল মুমিনিন অর্থাৎ মুসলিম উম্মাহর মা বা মুমিনদের মা। হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর দীর্ঘ সংশ্রব, সযত্ন শিক্ষা ও পরিচর্যায় তার স্ত্রীগণ পৃথিবীর জন্য দৃষ্টান্তে পরিণত হয়েছিলেন। তাদের জীবনে ছিল হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর রং আর হৃদয়ে ছিল- তার প্রতি অসীম ভালোবাসা। তাদের এ ভালোবাসা প্রকাশ পেত আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্যে।

আর রমজানে এ আনুগত্য ও ভালোবাসার রঙে নবী পরিবার পরিণত পুণ্যের ভরা বসন্তে।

হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পরিবার নিতান্ত সাধারণ জীবনযাপনেই অভ্যস্ত ছিল। পার্থিব কোনো জৌলুস ছিল না সেখানে। হযরত আয়েশা (রা.)-এর বর্ণনা অনুযায়ী, ‘মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত মুহাম্মদ (সা.)-এর পরিবার কখনও পর পর দু’দিন গমের রুটিতে তৃপ্ত হননি। ’ -সহিহ বোখারি।

রমজানের আগমনে তাদের দুনিয়াবিমুখতা আরও বৃদ্ধি পেত। দৈনন্দিন সাংসারিক আয়োজন কমিয়ে তারা কোরআন তেলাওয়াত, জিকির, নামাজ, ধর্মীয় জ্ঞানচর্চাসহ অন্যান্য নফল ইবাদতে আত্মনিয়োগ করতেন।

হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাদেরকে সুযোগ করে দিতেন। তিনি তাদের ইবাদতের প্রতি উদ্বুদ্ধ করতেন। হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রমজানের শেষ দশকে হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) রাত জেগে ইবাদত করতেন, তার পরিবারকে ডেকে দিতেন এবং লুঙ্গি শক্ত করে বেঁধে নিতেন। ’ -সহিহ বোখারি ও মুসলিম।

আল্লামা উবায়দুল্লাহ সিন্ধি (রহ.) এ হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজে ও তার পরিবারকে অধিক পরিমাণে ইবাদতে মগ্ন করতেন এবং তিনি স্ত্রী সংশ্রব পরিহার করতেন। -হাশিয়াতুস সিন্ধি আলা ইবনে মাজা অন্য হাদিসের বর্ণনা থেকে বোঝা যায়, রাসূল (সা.) রমজানে স্ত্রী সংশ্রব সম্পূর্ণ পরিহার করতেন না।

রমজানে নবী কারিম (সা.)-এর স্ত্রীগণ তারাবি ও তাহাজ্জুদের নামাজে বিশেষ মনোযোগ দিতেন। তারা নারী সাহাবিদের নামাজ শেখাতেন। নামাজ শেখাতে রমজানের রাতে জামাতে নামাজ আদায় করতেন। ইমাম আবু ইউসুফ (রহ.) বর্ণনা করেন, ‘হযরত আয়েশা (রা.) নারী সাহাবিদের ইমামতি করতেন এবং তিনি তাদের মাঝে দাঁড়াতেন। ’ -আসারু লি আবি ইউসুফ।

হযরত রাসূল (সা.)ও মাঝে-মধ্যে তার স্ত্রী-কন্যাদের একত্র করে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করতেন।

হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর স্ত্রীগণ রমজানে তাদের কোরআন তেলাওয়াত ও জিকিরের পরিণাম বাড়িয়ে দিতেন। সারা বছর তারা যে পরিমাণ কোরআন তেলাওয়াত ও জিকির করতেন, রমজানে তার পরিমাণ বহুগুণে বেড়ে যেত। বিশেষত তারা তাদের তেলাওয়াত, জিকির ও দোয়ার মাধ্যমে রমজানে লাইলাতুল কদরের অনুসন্ধান করতেন।

ইফতার-সাহরিসহ রমজানের যে যে সময়ে দোয়া কবুলের বর্ণনা এসেছে তারা তখন আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করতেন, ইবাদতে মগ্ন থাকতেন। রমজানে নবী পত্নীদের বদান্যতা ছিল প্রবাদতুল্য। সাধারণ ভাবে তাদের সকলেই ছিলেন দানশীল। তবে হযরত জয়নব বিনতে জাহাশ (রা.) ছিলেন দৃষ্টান্তস্বরূপ। তিনি কাঁচা চামড়া ব্যবহার উপযোগী করে এবং বিভিন্ন হস্তশিল্পের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতেন এবং তা সাধারণ মানুষের মাঝে বিতরণ করে দিতেন। রমজানে তার দানের হাত আরও প্রসারিত হতো।

পবিত্র রমজানে রাসূল (সা.)-এর স্ত্রীগণের অন্যতম প্রধান আমল ছিল- নারী সাহাবিদের ধর্মীয় বিধি-বিধান শিক্ষা দেওয়া। রমজানে নারী সাহাবিগণ রাসূল (সা.)-এর স্ত্রীদের নিকট উপস্থিত হয়ে দীন শিক্ষা করতেন। রমজানে রাসূল (সা.)-এর স্ত্রীগণ ঋতুমতী হলে ধর্মীয় পাঠদানে মনযোগী হতেন। কেননা এ সময় নারীরা রোজা ও নামাজের মতো আবশ্যক ইবাদত থেকে অবকাশ লাভ করে।

রমজানের শেষ দশকে হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইতেকাফ করতেন। রাসূল (সা.)-এর স্ত্রীগণ তখন তার সাথে দেখা করতেন এবং কথা বলতেন। হযরত সাফিয়্যা বিনতে হুয়াই (রা.) থেকে বর্ণিত। হরজত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইতেকাফ করছিলেন। আমি রাতের বেলা তার সঙ্গে দেখা করতে যাই এবং কথা বলি। অতপর আমি ফেরার জন্য দাঁড়াই। তিনি আমার সঙ্গে দাঁড়ান আমাকে এগিয়ে দেওয়ার জন্য। -(সংক্ষেপিত)- সহিহ বোখারি।

তাই আসুন! রমজানে আমরা নিজ পরিবারের সঙ্গে নবী পরিবারের চিত্রটা মিলিয়ে নেই। রমজানে পানাহারের আয়োজন কমিয়ে স্ত্রী কন্যাদের তেলাওয়াত, জিকির ও ইবাদতে মগ্ন হওয়ার সুযোগ করে দেই; তাদের উদ্বুদ্ধ করি। তাদেরকে ইসলামি বিধি-বিধান ও জ্ঞানচর্চার সুযোগ করে দেই। দোয়া ও মোনাজাতে শরিক করে নেই। পরিবারের সবাই মিলে রমজানের অপার কল্যাণ ও মহিমায় সিক্ত হই। আল্লাহ আমাদের তওফিক দিন। আমিন।

এমএ
সম্পর্কিত   বিষয়:  রমজান  


LATEST NEWS
MOST READ
Also read
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000.
Phone: PABX- 41053001-06; Online: 41053014; Advertisement: 41053012.
E-mail: [email protected], news©dailyobserverbd.com, advertisement©dailyobserverbd.com, For Online Edition: mailobserverbd©gmail.com
🔝
close