দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে পারিবারিক কলহের জেরে শ্বশুরের গোপনাঙ্গ কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুত্রবধূর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পুলিশ রাতেই পুত্রবধূকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছেন।
শনিবার রাত ৯টার দিকে ঘোড়াঘাট উপজেলার সিংড়া ইউনিয়নের গুচ্ছ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত শাহ জামাল প্রামাণিক (৬৫) বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর বাড়ি উপজেলার ৩নং সিংড়া ইউনিয়নের বিরাহীমপুর গুচ্ছ গ্রাম এলাকায়।
অভিযুক্ত পুত্রবধূ ফাতেমা বেগম (৩০) জানান, পনেরো বছর আগে মনির প্রামাণিকের সাথে তাঁর বিয়ে হয়। সেই থেকে একই ইউনিয়নের বারোপাইকার গড় এলাকায় তিন সন্তান নিয়ে স্বামীর বসতবাড়িতে বসবাস করছিলেন। তাঁর স্বামী পেশায় একজন শ্রমিক। পরে, সেখানে থাকা অবস্থায় স্বামীর প্রায় দুই-তিন লাখ টাকা ঋণ হয়ে যায়। গত দুই মাস আগে তাঁর স্বামী বাড়ি বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করেন। পরে, থাকার জায়গা না থাকায় শ্বশুর তাঁদেরকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং রান্নাঘরের এক পাশে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। সে সময় তাঁর স্বামী মনির তিন সন্তানসহ তাঁকে রেখে কাজের জন্য অন্য জেলায় চলে যান। কিছুদিন পর থেকে শ্বাশুড়ি ও শ্বশুরের সঙ্গে থাকার জায়গা নিয়ে ঝগড়া হতো এবং তাঁকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলা হতো। প্রায়ই তাঁকে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হতো। সাত দিন আগে তাঁর স্বামী মনির বাড়ি ফিরে আসেন। এ নিয়ে গত তিনদিন ধরে বিরোধ আরো চরম আকার ধারণ করে। গেল শনিবার রাতে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ঝগড়ার এক পর্যায়ে শ্বশুর শাহ জামাল অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। এরপর তাঁকে টেনে শোবার ঘরে নিয়ে গিয়ে অনৈতিক কাজ করার চেষ্টা করেন। সে সময় আগে থেকে নিজের কাছে রাখা ব্লেড দিয়ে শ্বশুর শাহ জামালের গোপনাঙ্গ কেটে দেন। পরে, তাঁর চিৎকারে লোকজন ওই ঘরে গিয়ে শাহ জামালকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আহসান হাবীব বলেন, শনিবার রাতে আহত শাহ জামাল প্রামাণিককে তাঁর পরিবারের লোকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসেছেন। তাঁর গোপনাঙ্গের গোড়ার দিকের প্রায় ৪ সেন্টিমিটার অংশ কেটে গেছে। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। আটটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। তিনি এখন পর্যবেক্ষণে আছেন।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, উপজেলার বিরাহীমপুর গুচ্ছগ্রাম এলাকায় শাহ জামাল প্রামাণিক নামের এক ব্যক্তির কেটে দেওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আহত শাহ জামাল প্রামাণিক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শাহ জামাল প্রামাণিকের পুত্রবধূকে থানায় নেওয়া হয়েছে।
জিএম/আরএন