কোম্পানিগুলো কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে। এ কারণে রাজশাহীর বাজারে ডিলাররা সয়াবিন তেলের সরবরাহ আবারও বন্ধ করেছে বলে জানিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা।
রোববার মহানগরীর সাহেববাজার, হড়গ্রাম বাজার, শালাবাগানসহ বিভিন্ন এলাকার বাজার ও মুদি দোকান ঘুরে খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বাজারে চাহিদা অনুযায়ী সয়াবিন তেলের সরবরাহ নেই। ডিলারদের পাঁচ কার্টন তেল অর্ডার দিলে এক কার্টন দিচ্ছে। ফলে, অনেক ক্রেতা তেল না পেয়ে ফেরত যাচ্ছেন। বর্তমানে বাজারে বোতলজাত ১ ও ২ লিটার সয়াবিন তেলের সংকট বেশি।
জানা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বৈঠকের পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মিল মালিকদের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ভোজ্যতেলের নতুন দাম অনুমোদন দেয়। সে অনুযায়ী, বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ৮ টাকা বাড়িয়ে ১৬৭ থেকে ১৭৫ টাকা। খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৪৯ থেকে বাড়িয়ে ১৫৭ টাকা এবং খোলা পাম অয়েলের দাম লিটারপ্রতি ১৪৯ থেকে বাড়িয়ে ১৫৭ টাকা করা হয়। এছাড়া, বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৮১৮ থেকে বাড়িয়ে ৮৬০ টাকা করা হয়।
এদিকে, গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজি। শিমের কেজি ২০ টাকা, ফুলকপি ১৫ থেকে ২০ টাকা, বাঁধাকপি ১০ টাকা, প্রতি পিস লাউ ৩০ টাকায় মিলছে এখন। পাকা টমেটোর কেজি ৪০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, মুলা ১০ টাকা আর শসার কেজি ৪০ টাকা। বেগুন ২০ থেকে ৩০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, এবং ঝিঙ্গা ও কাঁচামরিচ ৪০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া, লেবুর হালি ২০ থেকে ৪০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ৬০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৩০ টাকা এবং মিষ্টিকুমড়ার কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা।
শাকের মধ্যে লাল শাক ২০ টাকা, লাউ শাক ১০ টাকা, মূলা শাক ১০ টাকা, পালং শাক ১০ টাকা, পুঁই শাক ২০ থেকে ২৫ টাকা ও ডাঁটা শাক ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। কলমি শাক তিন আঁটি বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকায়।
বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে অন্যান্য মুরগির দামও কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা ও সোনালি হাইব্রিড ২৯০ টাকা দরে। এছাড়া, দেশি মুরগি ৫৪০ থেকে ৫৮০ টাকা। লেয়ার লাল মুরগি ৩০০ টাকা ও সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
গরুর মাংস ও খাসির মাংসের দামেও হেরফের হয়নি। গরু ও মহিষ কেজি প্রতি ৭৫০ থেকে ৯৫০ টাকা ও গরুর মাথার মাংস ৫৫০ টাকা। আর খাসির মাংস কেজি প্রতি এক হাজার থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চাষের শিং মাছ আকারভেদে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, রুই আকারভেদে ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, দেশি মাগুর মাছ ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চাষের পাঙ্গাস ১৮০ থেকে ২২০ টাকায় ও বড় চিংড়ি ৭০০ থেকে ১১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এ ছাড়া, বোয়াল মাছ ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, বড় কাতল ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, চাষের কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, সামুদ্রিক পাঁচমিশালি মাছ ১৫০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। ৫০০ গ্রামের ইলিশ এক হাজার টাকা, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ ১৫৫০ টাকা ও এক কেজি ওজনের ইলিশ ১৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে আলু ও পেঁয়াজের দাম কেজিতে আরও অন্তত ৫ টাকা কমেছে। বিভিন্ন দোকানে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা দরে। শীতকালীন নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকায়।
ব্রয়লার মুরগির ডিমের দাম গত সপ্তাহের মতোই আছে। বাজারে প্রতি ডজন ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। হাঁসের ডিম প্রতি ডজন ২৩০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে চালের দরও আগের সপ্তাহের তুলনায় তেমন হেরফের হয়নি। কাটারিভোগ আতপ ২৫ কেজির বস্তা ২ হাজার ১০০ টাকা, জিরাশাইল ৫০ কেজির বস্তা ৩ হাজার ৯৫০ টাকা, বেতি আতপ ৫০ কেজির বস্তা ৩ হাজার ৫০০ টাকা, হাফ সেদ্ধ নাজিরশাইল ২ হাজার ২০০ টাকা ও পাইজাম আতপ ১ হাজার ৮২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মুদি দোকানে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা ও খোলা সয়াবিন তেল ১৬৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্যাকেটজাত চিনি ১২৫ টাকা ও খোলা চিনি ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।
ডালের মধ্যে ছোট মসুরের ডাল ১৩০ টাকা, মোটা মসুরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৫৫ টাকা, খেসারি ডাল ১১০ টাকা, চনার ডাল ১৪৫ টাকা ও ছোলা ১৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১২৫ টাকা ও ময়দা ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। খোলা সরিষার তেলের দাম ছিল প্রতি লিটার ১৯০ টাকা। দেশি রসুন ২৬০ টাকা, চায়না রসুন ২৪০ টাকা, চায়না আদা ২০০ টাকা এবং নতুন ভারতীয় আদা ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে।
এফএ/আরএন