পুলিশের নিরবতা ও অবৈধ লেনদেনে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে মুন্সীগঞ্জ সদর ও চাঁদপুরের মোহনপুর এলাকার মেঘনার নৌপথ। বালু মহালের আধিপত্য নিয়ে ঝড়ছে রক্তপাত, পড়ছে লাশ। এক সরকার যায় আরেক সরকার আসে কিন্তু নদীর দখলদারিত্বের সমাপ্তি নেই। পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতারাও এই দখলদারিত্বের সাথে জড়িত। তারাও পায় মাসোহারা। শেল্টার পেয়ে নদীর শাসনভার নিয়েও মেতে ওঠে বালু ও জলদস্যুর দল।
বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ ও দখলদার দুই গ্রুপ অর্থাৎ ত্রি-মুখী সংঘর্ষে দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। আহত হয় আরো অনেকে। মুন্সীগঞ্জ সদর ও চাঁদপুরের মোহনপুর মোহনার সীমানার চর আব্দুল্লাহ ও মোহনপুর এলাকায় এ গুলির ভাব বিনিময় হয়। এরপরও থেমে নেই জলদস্যুদের তান্ডব। পুলিশ, জলদস্যু কানা জহির ও কিবরিয়া মিজি-কে কার গুলিতে নিহত হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
কেউ বলছে চাঁদপুর জেলার মোহনপুর নৌ পুলিশের গুলিতে, কেউ বলছে দুই গ্রুপের গুলি বিনময়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। দুইটি হত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই শুক্রবার সকালে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে গুলি করে কানা জহির গং। মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ওই নারীকে।
আহত নারীর স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার মেঘনা নদীতে গোলাগুলিতে দুইজন নিহতের ঘটনার জের ধরে একাধিক ডাকাতি মামলার আসামি নৌ-ডাকাত কানা জহির ও কিবরিয়া মিজির মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, সকালে কিবরিয়া গ্রুপের সদস্য রাজু সরকারের বাড়িতে হামলা চালায় কানা জহিরের ভাই শাহিন বেপারী ও তার লোকজন। এসময় অতর্কিত গুলিতে আহত হন এক অন্তঃসত্ত্বা নারী। আহত অবস্থায় ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা পিংকি আক্তারকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসা শেষে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহত ওই অন্তঃসত্তা নারীর শরীরের ডান পাশে কোমড়ের নিচে গুলি ঢুকে অপর পাশ থেকে বের হয়ে যাওয়ায় ওই নারী বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শৈবাল বসাক।
এদিকে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীতে বালুমহালের নির্ধারিত সীমানার বাইরে গিয়ে নদীর পাড় ঘেঁষে বালু উত্তোলন করার সময় স্থানীয়রা বাঁধা দিতে গেলে চার রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করা হয়। এ সময় নাহিদ (২০) নামে এক যুবক গুরুতর আহত হয়।
শুক্রবার সকাল নয়টার দিকে গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের বেরু মোল্লাকান্দি গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদীর তীরে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে গুলিতে দুইজন হত্যার ঘটনায় কোন মামলা হয়নি।
কানা জহির গ্রুপ এলাকা দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে। দুই জেলার নদীরপাড়ের মানুষজন আতঙ্ক-উৎকণ্ঠায় দিন যাপন করছে। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ না-কি জলদস্যুদের গুলিতে দুইজন নিহত হয়েছে তারও সুষ্ঠু তদন্ত চায় এলাকাবাসী।
এমএইচএস/এসআর