Sunday | 12 October 2025 | Reg No- 06
Epaper | English
   
English | Sunday | 12 October 2025 | Epaper
BREAKING: ট্রাইব্যুনালের ১৫ অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তা সেনা হেফাজতে      জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান ২ দিন পেছালো      জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কর্মী সমাবেশে উত্তেজনা, ছত্রভঙ্গ করলো পুলিশ       এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার টাকার মধ্যে হওয়া উচিত: জ্বালানি উপদেষ্টা      দু’একজন উপদেষ্টা ও প্রশাসন একটি দলকে ক্ষমতায় নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে: পরওয়ার      এবারের নির্বাচনে আইনের শাসন কাকে বলে দেখাতে চাই: সিইসি      ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে আর্জেন্টিনার দুর্দান্ত জয়      

হানি ট্র্যাপ প্রতারক চক্রের নারীসহ গ্রেফতার ৬

Published : Wednesday, 22 January, 2025 at 8:31 PM  Count : 239

যশোরেচৌগাছায় হানি ট্র্যাপ বা ভালবাসার ফাঁদ প্রতারক চক্রের ২ জন নারীসহ ৬জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

২১ জানুয়ারি তাদেরকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থকে গ্রেফতার করে যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- যাত্রাপুরের আলমগীরের স্ত্রী রুপালি খাতুন (৩৫), মনমথপুরের মৃত মান্নানের ছেলে হৃদয় মহিফুল (৩৬) ও দেলোয়ার হোসেন, কয়ারপাড়ার শাহজাহান আলীর ছেলে নান্নু (৩৩) ও তার স্ত্রী জাকিয়া (২৯), মহেশপুর মান্দার বাড়িয়া গ্রামের জাহিদ হোসেন (২৯)।

এক প্রেস নোটে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে, যশোর চৌগাছার রুস্তমপুর গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে মোস্তাক হোসেন চৌগাছা থানায় অভিযোগ করেন, তার ভাই মোঃ আব্দুর রহমানকে বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে মহিলাকে দিয়ে ডেকে নিয়ে একটি চক্র 'হানি ট্রাপের' মাধ্যমে ফাঁদে ফেলে মুক্তিপণ চাচ্ছে। এ ঘটনায় যশোর জেলার পুলিশ সুপার জিয়া উদ্দিন আহম্মেদের নির্দেশে মাঠে নামে গোয়েন্দা পুলিশে একটি দল। 

২১ জানুয়ারি চৌগাছা থানাধীন চান্দআফরা গ্রামে অভিযান ছালিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার করে। এবং পরবর্তীতে ভিকটিমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২২ জানুয়ারি (রাত ০২.৩০ থেকে ০৩.২৫ পর্যন্ত) উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে এই প্রতারক চক্রের সক্রিয় ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করে ডিবি। 

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন যশোর শহর থেকে শুরু করে বিভিন্ন উপজেলায় এই হানি ট্র্যাপ বা ভালবাসার ফাঁদকে কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী ব্যবসার হাতিয়ার বানিয়েছে। এবং তাদের সেই ফাঁদে পা দিয়ে শিক্ষক, বিভিন্ন শ্রেনীর ব্যবসায়ী, সাধারণ ব্যক্তি এমনকি পুলিশ সদস্যরাও অসন্মানিত হওয়ার পাশাপাশি আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কিন্তু এতো জানাজানির পরেও কিছু মানুষ ইচ্ছা করেই যেনো হানি ট্র্যাপের শিকার হচ্ছেন।

এই হানি ট্র্যাপ বা ভালবাসার ফাঁদে পড়েই গত ২৯ ডিসেম্বর চৌগাছা থানার সাবেক ওসি পায়েল হোসেন এবং ১১ জানুয়ারি একই উপজেলার একজন শিক্ষক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছেন। জানা যায়, সেই শিক্ষকে গত ডিসেম্বর মাসের ১৮ তারিখে হানি ট্র্যাপের শিকার হয়ে উপজেলার চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের সাড়ে ৩ লাখ টাকা দিয়েছেন। কিন্ত সন্ত্রাসীরা আরো টাকার দাবী করলে সেই শিক্ষক টাকা দিতে অস্বীকার করেন। তখন সন্ত্রাসীরা তার সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে। উপজেলাতে বর্তমানে মেয়েদের পাশাপাশি এক শ্রেনীর কুরুচিপূর্ণ ছেলেদেরকেও হানি ট্র্যাপ হিসেবে ব্যবহার করছে। এই ছেলেরা স্বচ্ছল ও ধনী পরিবারের স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া মেয়েদেরকে প্রেমের অভিনয়ে ফাসিয়ে অশ্লিল ভিডিও বানিয়ে তার পরিবারকে ব্লাকমেইল করছে। এবং সেই পরিবারকে সামাজিকভাবে অপমানিত করার পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতিও করছে।

অন্যদিকে কিছুদিন আগে প্রতারণার ফাঁদে পা দেওয়া কয়েকজন ভুক্তভোগীর সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভূক্তভোগীরা জানিয়েছেন, আওয়ামী সরকারের সময়েই (২০১৮ সালের মাঝামাঝি) এই প্রতারক চক্রের আবির্ভাব ঘটে। সেসময় চৌগাছা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা বিশ্বাস ওরফে মোস্তর নেতৃত্বে বিভিন্ন সন্ত্রাসীরা এই প্রতারক চক্র পরিচালনা করতো। বিভিন্ন বয়সের মেয়েদেরকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে তারা স্বচ্ছল ব্যক্তিদেরকে শিকারে পরিনত করতো। প্রথমে নারী সদস্যরা শিকারকে লোভ দেখিয়ে নিজস্ব ডেরায় নিয়ে আসে। সেখানে মাদক সেবন, অশ্লীল নাচ গানের সাথে সাথে শিকারকে যৌনতায় আকৃষ্ট করা হয়। এসকল আস্তানায় প্রবেশ থেকে সকল ঘটনাই গোপন ক্যামেরায় ধারন হতে থাকে। এরপর যৌনতার এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীদেরকে মোবাইলের মাধ্যমে সংকেত পাঠানো হলে তারা এসে শিকারকে সেই মহিলাসহ ধরে ফেলে। সেসময় কেউ বাধা দিলে চলে নির্মম নির্যাতন। কাউকে কাউকে সন্ত্রাসীরা তাদের টর্চার সেলেও নিয়ে যায়। সেখানে তাকে উলঙ্গ করে যৌনাঙ্গে ইট ঝুলিয়ে অথবা উপরের দিকে দড়ি দিয়ে বেধে রাখা হয়। আবার কখনো জ্বলন্ত সিগারেটের আগুন দিয়ে ছ্যাকা দেওয়া হয়। নির্যাতনের আগে বা পরে সেই মহিলাসহ তাকে উলঙ্গ বা অর্ধ্ব উলঙ্গ অবস্থায় ঘটনার বিস্তারিত শিকারের মুখ থেকে বক্তব্য আকারে ভিডিও করে সংরক্ষন করা হয়। এরপরেই তাকে ব্লাক মেইলিং করতে থাকে সন্ত্রাসীরা। তারপরেও সুবিধা না হলে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে তাদেরকে জনসন্মুখে অসন্মানিত করা হয়। 

সূত্র বলছে, বর্তমানে উপজেলাতে যে কয়েকটি চক্র রয়েছে তার মধ্যে বিশ্বাসপাড়ার বাবু ওরফে চোর বাবুর চক্রটি বেশ বড়। এছাড়াও আরো কয়েকটি চক্র রয়েছে। চক্রের কেউ কেউ আবার পুলিশের দালাল হিসেবেও পরিচিত। এছাড়া চক্রের সকলেই সর্বদা ক্ষমতাসীন দলের লোক হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে। যেকারনে সহজে কেউ তাদের বিরুদ্ধাচারন করে না। তবে এই ৬ জনের গ্রেফতারে উপজেলাবাসি যশোর পুলিশ সুপার এবং গোয়েন্দা পুলিশকে সাধুবাদ জানিয়ে এই সকল প্রতারক চক্রের সকলকে আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানিয়েছেন।

জেডআরআর/এসআর
সম্পর্কিত   বিষয়:  যশোর   চৌগাছা  


LATEST NEWS
MOST READ
Also read
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000.
Phone: PABX- 41053001-06; Online: 41053014; Advertisement: 41053012.
E-mail: [email protected], news©dailyobserverbd.com, advertisement©dailyobserverbd.com, For Online Edition: mailobserverbd©gmail.com
🔝
close