দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে কমেছে ভারত থেকে আমদানিকৃত চালের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে দাম কমেছে প্রতি কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা।
এদিকে পাইকাররা বলছেন, বর্তমানে দেশে নতুন চাল উঠতে শুরু করেছে সেই তুলনায় ভারতীয় চালের দাম অনেকটাই বেশি। যদি দামটা আরেকটু কমতো তাহলে ভালো হতো।
অপরদিকে আমদানিকারকরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি হওয়ায় এবং ক্রেতা সংকটের কারণে কম দামে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।
তাদের দাবি, যেহেতু দেশে ধান কাটতে শুরু করেছে তাই কৃষকদের কথা চিন্তা করে আমদানিটা বন্ধ করলে কৃষকরা যেমন ধানের দাম পাবে তেমনই আমরা লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পাব।
চাল আমদানিকারক দিনেশ পোদ্দার বলেন, 'গত ১২ আগস্ট থেকে চাল আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। এরপর দুই দফায় আমদানির অনুমতির মেয়াদ বাড়ানো হলেও সর্বশেষ ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু মেয়াদ বাড়ানোর পর দিনাজপুরের হিলি বন্দরে দেখা দিয়েছে ক্রেতার সংকট। যেখানে বন্দরে সকাল হলেই পাইকারদের ভিরে মুখরিত হয়ে উঠতো সেখানে বর্তমানে গোটা বন্দর ফাঁকা পড়ে আছে। মুষ্টিমেয় কয়েকজন পাইকার বন্দরে চাল দেখতে আসছেন। কেউ নিচ্ছেন কেউবা না নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। যার কারণে এই বন্দরে চালের আমদানিটা অনেকটাই কমে গেছে।'
তিনি বলেন, 'এই বন্দর দিয়ে এক মাস আগেও ১০০ থেকে ১২০ ট্রাকে চাল আমদানি হতো ভারত থেকে। সেখানে বর্তমান আমদানি হয় গড়ে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ ট্রাকে। তবে বর্তমান চালের বাজারে ধস নেমেছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশির কারণে দামটা অনেকটাই কমে গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে দাম কমেছে ৪ থেকে ৫ টাকা। আগে যে সর্ণা জাতের চাল বিক্রি হয়েছিল ৬৫ থেকে ৬৬ টাকায় তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬১ টাকা কেজি দরে। এছাড়াও ক্রেতা সংকটের কারণেও দামটা কমিয়ে দিয়েছেন আমদানিকারকরা।'
আমদানিকারক বলেন, ক্রেতা সংকটের কারণে তারা ভারতীয় চালের দাম কমিয়ে দিয়েছেন তারপরও ক্রেতা নেই। এতে তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।
পাইকাররা বলছেন, বর্তমানে চালের দাম যে কয় টাকা কমেছে তাতে কমা বলে না কারণ দেশের বাজারে নতুন চাল উঠতে শুরু করেছে সেই চালের দামই কম, ভারতীয় চাল এই দামে নিয়ে বাজার ধরা তাদের জন্য মুশকিল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই তাদের অভিযোগ, ভারতীয় চালের দামটা আরও কমা দরকার।
হিলি শুল্ক স্টেশন রাজস্ব কর্মকর্তা এম আর জামান বাধন বলেন, 'হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে আগের তুলনায় চাল আমদানি অনেকটাই কমে গেছে। চাল নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য তাই এটিকে দ্রুত ছাড়করণ করা হয়ে থাকে। হিলি স্থলবন্দর দিয়ে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর দুই মাসে তিন হাজার ৩১৬ ভারতীয় ট্রাকে এক লাখ ৪৩ হাজার ৯৫২ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে।'
এমআর/এমএ