নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের জুনিয়র ও মুহুরীর বিরুদ্ধে এক নারীকে প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানি সহ তার পরিবারের সদস্যদের মারধরের ঘটনায় মামলা নিতে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। গত দুইদিন ধরে থানা ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গেলেও মামলা নেয়া হয়নি বলে দাবি ভুক্তভোগীদের। শুধুমাত্র মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের নাম থাকার কারণে পুলিশ মামলা নিচ্ছে না এমন দাবি তাদের। সাখাওয়াত হোসেন খানের নাম নিয়েই পুলিশের আপত্তি।
এর আগে গত ২৬ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রকাশ্যে রাজিয়া সুলতানা (৩৮) নামে এক নারীকে প্রকাশ্যে মারধর, শ্লীলতাহানি সহ প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটে। একই সাথে তাদের মারধরে রাজিয়া সুলতানার স্বামী মো. ইরফান মিয়া (৪২), তার ছেলে জিদান (১৭) ও শিশু সন্তান আব্দুল্লাহ (৫) আহত হয়েছে। এই ঘটনার পরপর রাজিয়া সুলতানা বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এদিকে এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। যা ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিও দেখা যায়, যখন মারধর করা হচ্ছিলো তখন একটি শিশু বাবা বাবা বলে দৌড়াচ্ছিলো। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক নেতিবাচক প্রক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে রাজিয়া সুলতানা বলেন, আদালতে হাজিরা দিতে গেলে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনের নির্দেশে তার জুনিয়ররা ও মুহুরী মিলে আমাদের উপড় হামলা করে। তারা আমার স্বামীকে বেধড়ক মারধর করে এবং আমার শরীর ও লজ্জাস্থানে আঘাত করে শ্লীলতাহানি করে। আমার জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলেছে। আমার শিশু সন্তানকে মারধর করেছে।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনায় দুইদিন পার হলে গেলেও এখনও পুলিশ মামলা নেয়নি। গত সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত থানা ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে দৌড়াদৌড়ি করেও মামলা গ্রহণ করানো সম্ভব হয়নি। পুলিশ বলে মামলা থেকে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের নাম বাদ দিতে হবে। অন্যথায় এই মামলা গ্রহণ করা হবে না। আমি আমার পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর জেলা সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল বলেন, এটা ঠিক না। যেই ঘটনা ঘটেছে তা নিন্দনীয়। এরপর ভুক্তভোগী মামলা করতে গেলে প্রভাবশালীর নাম আছে বিধায় মামলা নেয়া হবে না এটা বাজে দৃষ্টান্ত। মামলা অবশ্যই নিতে হবে, এরপর পুলিশ তদন্ত করে সত্য মিথ্যা বের করবে। কিন্তু প্রভাবশালীদের নাম থাকলে মামলা নেয়া হবে না, এমন চর্চা থেকে বের হয়ে আসা জরুরী।
তবে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, রাতের মধ্যেই মামলা হবে। একই ঘটনায় দুইটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে। যার কারণে আমরা যাছাই বাছাই করছিলাম; আসলে ঘটনা কি? ঘটনার সত্যতা আছে ঘটনা ঘটছে। মামলা নিয়ে নিবো। কে কতটুকু কি করছে না করছে মামলা নিলে বাকীটা তদন্তের পর বেরিয়ে আসবে।
এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, এ ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। আমি ঘটনার ঘটার এক ঘন্টা পর আদালতে যাই। আর আমি তখন আদালতে ছিলাম না তা ভিডিও দেখলেই স্পষ্ট বুঝা যায়। তারপরও কি কারণে আমার নাম যুক্ত করা হয়েছে তা জানা নেই।
এসএস/এসআর