চতুর্থ ফসল হিসেবে লাউ চাষ করে সফল হয়েছেন লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের কুলপাগলি গ্রামের আব্দুল কাদের। তাঁর বাড়ি সংলগ্ন রইস্যার বিল এলাকায় ১৪ শতাংশ জমিতে দেশীয় পদ্ধতিতে ‘চাঁদতারা’ জাতের লাউ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন তিনি। পরিবারের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তিনি। লম্বা লাউ চাষ করে বীজ বপনের ৪৫ থেকে ৫০ দিনের মধ্যে ভালো ফলন পেয়ে তিনি খুশি। আব্দুল কাদের লাউ চাষে জৈব সারের সঙ্গে সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ব্যবহার করেছেন। তাঁর এ সফলতা দেখে অন্যান্য সবজি চাষিরাও লাউ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
সামান্য পুঁজি আর অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে লাউ চাষে সফল হয়েছেন আব্দুল কাদের। মাত্র ১৪ শতাংশ জমিতে লাউয়ের চারা রোপণ করে ইতিমধ্যে ৭০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। মাচায় থাকা লাউ আরও ৪০ হাজার টাকার বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষক আব্দুল কাদের বিষ প্রয়োগ ছাড়াই ১৪ শতাংশ জমিতে দেশীয় পদ্ধতিতে মাচায় ‘চাঁদতারা’ জাতের লাউ চাষ করেছেন। তাঁর লাউ ক্ষেতে মাচার নিচে ঝুলছে ছোট-বড় শত শত সবুজ লাউ। দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। যে দিকে চোখ যায়, শুধু লাউ আর লাউ।
বিষমুক্ত লাউ চাষের কারণে বাজারে তাঁর লাউয়ের ব্যাপক চাহিদা ছিল। বর্তমানে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের অন্যান্য কৃষকরাও তাঁর দেখাদেখি লাউ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
কৃষক কাদের জানান, অল্প শ্রম ও সীমিত পুঁজিতে লাউ চাষ করে ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব। সপ্তাহে দুই দিন তিনি এই ক্ষেত থেকে লাউ কেটে বিক্রি করেন। এ বছর শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং ঠিকমতো পরিচর্যা করতে পারলে এই ক্ষেত থেকে আরও ২ থেকে আড়াই হাজার লাউ উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে ধারণা করছেন। গড়ে প্রতিটি লাউ ২৫ টাকা দরে বিক্রি করলেও আরও ৪০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন বলে আশা করছেন। আগামীতে আরও বড় পরিসরে লাউয়ের পাশাপাশি বিষমুক্ত অন্য সবজি চাষ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
লোহাগাড়া উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রবিউল হোসেন বলেন, বিষমুক্ত লাউ চাষ করে কৃষক আবদুল কাদের অনেক লাভবান হয়েছেন। এ চাষে তেমন পরিশ্রম করতে হয় না, উৎপাদন খরচও কম। কৃষক কাদের জৈব পদ্ধতিতে বিষমুক্ত লাউ চাষ করছেন। বর্তমানে লাউ চাষের এ পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয় হওয়ায় এলাকার অন্য কৃষকরা লাউ চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাজী শফিউল ইসলাম বলেন, আবদুল কাদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কৃষক। তাঁকে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। কৃষক কাদের বিষমুক্ত লাউ চাষ করছেন, কোনো ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করেননি। বাজারে লাউয়ের চাহিদা ভালো থাকায়, ভালো দামে বিক্রি করতে পেরে তিনি লাভবান হয়েছেন।
এমইউ/এসআর