সরিষাবাড়ীতে দোকানে কর্মচারীর রহস্যজনক মৃত্যু, ধামাচাপার চেষ্টা

জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌরসভার শিমলা বাজারের সুমন ফার্মেসিতে কর্মচারী বিশাল মিয়া (১৭) রহস্যজনকভাবে মারা গেছেন। দোকানমালিক ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলেও মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

নিহত বিশাল মিয়া পার্শ্ববর্তী টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি উপজেলার কেরামজানি গ্রামের ভ্যানচালক সাগর মিয়ার ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আরডিএম মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী বিশাল মিয়া পড়াশোনার পাশাপাশি সুমন ফার্মেসিতে ওষুধ বিক্রেতা হিসেবে কাজ করতেন।

রবিবার (২৬ অক্টোবর) রাতে ফার্মেসির ভেতরে মালিক সুজিত কুমার রায় সুমনের জন্মদিনের অনুষ্ঠান হয়, সেখানে বিশাল মিয়াও উপস্থিত ছিলেন। পরদিন সোমবার যথারীতি সে ফার্মেসিতে আসে। বিকেলে দোকানের ভেতরের কক্ষ থেকে অচেতন অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। পরে এলাকায় জানানো হয়, সে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে।

এদিকে, ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। নিহতের হতদরিদ্র বাবা সন্ধ্যায় লাশ হাতে পেয়ে ভাড়া বাসা ইস্পাহানিতে নিয়ে যান। রাত ৮টার দিকে প্রশাসনের অগোচরে লাশ গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ রাস্তা থেকে লাশ উদ্ধার করে।

স্থানীয়রা জানান, ফার্মেসিতে মালিকসহ সবসময় দুই-তিনজন কর্মচারী এবং ক্রেতাদের ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু বিকেলে ফার্মেসির ভেতরের রুমে ‘আত্মহত্যা’ ঘটনার খবর জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দেবাশীষ রাজবংশী বলেন, ‘সন্ধ্যার পর কয়েকজন লোক গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় এক রোগীকে হাসপাতালে আনে। কিন্তু হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়।’

সুমন ফার্মেসির মালিক সুজিত কুমার রায় সুমনের বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হলেও তিনি অসুস্থতার অজুহাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল হাসান বলেন, ‘পরিবার লাশটি বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ রাস্তা থেকে লাশ উদ্ধার করেছে। অপমৃত্যু মামলা দায়েরের পর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।’

তিনি আরও জানান, ফার্মেসির মূল অংশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে, তবে যেই রুমে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করা হচ্ছে, সেখানে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এবি/আরএন