বিবাহ একটি পবিত্র সামাজিক বন্ধন, যা মানবজীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এটি কেবল দুটি মানুষের নয় বরং দুটি পরিবারের এবং বৃহৎ অর্থে একটি সমাজের মধ্যকার বন্ধনের প্রতিফলন। বিবাহ মানবজীবনে স্থিতিশীলতা, ভালোবাসা, পারস্পরিক নির্ভরতা ও বিশ্বাস গঠনের একটি অনন্য উপায়।
কিন্তু বর্তমানে সমাজে এই স্থায়ী সম্পর্কটি বিচ্ছেদে রুপ নিয়ে আশঙ্কাজনক ভাবে দিন দিন বেড়েই চলেছে।
বিবাহ বিচ্ছেদের পেছনে বড় কারণগুলো হলো, দাম্পত্য জীবনে বনিবনার অভাব, যৌতুক, বাল্যবিবাহ এবং বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক।
সাম্প্রতিক বছরে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
উপজেলা রেজিষ্ট্রার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে এ যাবৎ প্রায় ১ হাজার ৭৬৭ বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে, যা দৈনিক গড়ে ৭ জনের সমান।
সচেতনমহল বিবাহ বিচ্ছেদের পেছনে পরকীয়া, অপরিণত বয়সে বিয়ে, তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার ও প্রবাস জীবনের কারণে সংসারে অস্থিরতাকেই দায়ী করেন। বিচ্ছেদের কারণে অনেকেই মামলার শিকার হয়ে আদালতে ঘুরে সেখানেও পড়ছেন বিড়ম্বনায়।
তাদের মতে, পারিবারিক শিক্ষা, নৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি গুরুত্ব দিলে সমাজে বিবাহ বিচ্ছেদ অনেকাংশে কমানো সম্ভব। পাশাপাশি দেশের প্রচলিত আইন যথাযথ ভাবে প্রয়োগ ও তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে বিবাহ বিচ্ছেদের হার কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এ এ এম আবু তাহের বলছেন, 'অল্প বয়সে বিয়ে হলে ছেলে-মেয়ের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে। এর ফলে মাতৃমৃত্যু হারও বৃদ্ধি পায়। বিবাহ বিচ্ছেদের একটি প্রধান কারণ বাল্যবিবাহ।'
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হোসনে আরা বলেন, 'আগে নারীরা স্বামীর নির্যাতন মেনে নিতেন। এখন নারীরা নির্যাতন হলেই তার প্রতিকার চান। পারিবারিক বন্ধনের দূরত্ব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার ও যৌতুক প্রথা কারণে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে। এ প্রথা বিলুপ্ত হলেই সমস্যার সমাধান সম্ভব।
এলএইচ/এমএ