বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের ২০টি ব্রিজে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছেন লক্ষাধিক মানুষ। যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে হলদিয়া হাট ব্রিজের মতো বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এতে আতঙ্ক বিরাজ করছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
২০২৪ সালের জুন মাসে হলদিয়া হাট আয়রন ব্রিজ ধসে মাইক্রোবাসসহ খালে পড়ে ৯ জন মারা যায়। ঝুঁকিপূর্ণ আরও ২০টি আয়রন ব্রিজ নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
সরেজমিন দেখা গেছে, কয়েক বছর আগে থেকেই আয়রন ব্রিজগুলোতে দেখা দিয়েছে ফাটল, ধরেছে মরিচা, নড়বড়ে হয়ে পড়েছে সেতুগুলোর অনেক জায়গা, দুই পাশের রেলিং ভেঙে গেছে। পিলারের আস্তর খসে বের হয়ে গেছে ভেতরের রড, ভেঙে পড়ছে ব্রিজের মধ্যের স্ল্যাব। তবে বিকল্প উপায় না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই ব্রিজ দিয়ে মানুষ ও ভারি যানবাহন চলাচল করছে।
এই আয়রন ব্রিজগুলো হালকা যান প্রকল্পের আওতায় ২০০২ থেকে ২০০৬ সালে নির্মাণ করা হয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্রিজগুলো দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী এবং নতুনভাবে ব্রিজ নির্মাণেরও দাবি জানিয়েছেন তারা।
আয়রন ব্রিজগুলো হলো – হলদিয়া হাট ব্রিজ, রাড়িবাড়ির ব্রিজ, আউয়াল নগর ব্রিজ, বাহাদুর তালুকদার বাড়ি-সংলগ্ন ব্রিজ, মুসুল্লিবাড়ির ব্রিজ, গাজীপুর-কাঁঠালিয়া সংযোগ ব্রিজ, সোনাগাজা ব্রিজ, আলতাফ তালুকদার বাড়ি ব্রিজ, ৬ নম্বর ওয়ার্ড সিকদার বাড়ি-সংলগ্ন ব্রিজ, দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া রাহিমিয়া দাখিল মাদ্রাসা-সংলগ্ন ব্রিজ, টেপুরার মল্লিক বাড়ির সামনের ব্রিজ, জেবিসনের হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়-সংলগ্ন ব্রিজ, মোল্লা বাড়ি-সংলগ্ন ব্রিজ, পূর্বচিলা আশিখার খালের ব্রিজ, কাপালির স্লুইজ সংলগ্ন ব্রিজ, কালু বিশ্বাস বাড়ি-সংলগ্ন ব্রিজ, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জেন্নাত মিয়ার বাড়ি-সংলগ্ন ব্রিজ, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ-পশ্চিম সোনা উঠা ব্রিজ, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হুমায়ুন আকন বাড়ি-সংলগ্ন ব্রিজ, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হারুন মেম্বার বাড়ি-সংলগ্ন ব্রিজ, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেলকার বাড়ি-সংলগ্ন ব্রিজ।
এই ব্রিজগুলোর মধ্যে মোল্লা বাড়ির ব্রিজ, জেবিসনের হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়-সংলগ্ন ব্রিজ, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জেন্নাত মিয়ার বাড়ি-সংলগ্ন ব্রিজ, টেপুরার মল্লিক বাড়ির সামনের ব্রিজগুলো ধসে পড়ে গেছে। এসব এলাকার জনসাধারণের চলাচলে ভোগান্তির শেষ নেই।
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মকবুল হোসেন বলেন, দ্রুত এই ব্রিজগুলো সংস্কার বা নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা, যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। তিনি অল্প সময়ের মধ্যে নতুন ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান।
আমতলীর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মো. ইদ্রিস আলী বলেন, বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজগুলো সরিয়ে গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন, দ্রুত সময়ে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।
এসকে/আরএন