লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের উত্তর আমিরাবাদ গ্রাম দিয়ে বয়ে গেছে টংকাবতী খাল। সেই খালের উপর কাঠ ও বাঁশ দিয়ে তৈরি একটি নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে মহুরি পাড়া, ঘোনাপাড়া, চৌধুরীপাড়া, রাহাত আলী পাড়া, সৈয়দ পাড়া সহ কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষ।
প্রায় ১৫ বছর আগে এলাকাবাসী নিজেদের চাঁদায় সাঁকোটি নির্মাণ করেন। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে খালের পানিতে সাঁকোটি ভেঙে পড়ে যায়। ফলে শুষ্ক মৌসুমে গ্রামবাসীকে নিজেদের টাকায় মেরামত করতে হয়। বর্ষায় ছাত্র-ছাত্রীসহ বয়স্কদের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। উত্তর আমিরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর আমিরাবাদ এম.বি. উচ্চ বিদ্যালয়, বার আউলিয়া ডিগ্রি কলেজসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হয় এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো পার হয়ে। সারা বছর এসব শিক্ষার্থীদের পোহাতে হয় দুর্ভোগ।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর আমিরাবাদ এলাকায় সাঁকোটি কাঠ ও বাঁশ দিয়ে তৈরি। সাঁকোর বিভিন্ন স্থানে গর্ত হয়ে গেছে। সেই ভগ্নপ্রায় সাঁকো দিয়েই শত শত ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকাবাসী প্রতিদিন পারাপার হচ্ছে।
ছাত্র-ছাত্রীরা জানান, খালের উপর একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা, যাতে ভবিষ্যতে কষ্ট কমে এবং সহজে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া যায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, জনপ্রতিনিধিরা গত ১৫ বছর ধরে শুধু আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। এখন নতুন সরকার আসায় তারা আশা করছেন, এই সরকারের আমলেই একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ হবে।
এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী বলেন, “বৃষ্টির দিনে আমাদের এই সাঁকো দিয়ে পারাপারে অনেক কষ্ট হয়। চেয়ারম্যান-মেম্বাররা শুধু আশ্বাস দেন, কিন্তু সেতু বানান না।”
এইচএসসি পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা ছোটবেলা থেকে এই সাঁকো দিয়ে স্কুল-কলেজে যাই, কিন্তু কেউ আমাদের কষ্ট কমানোর জন্য সেতু বানিয়ে দেয়নি। সরকারের কাছে আমরা স্থায়ী একটি সেতু তৈরির জোর দাবি জানাই।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু হেনা মোস্তফা বলেন, “আমি চাইলেও এত বড় কাজ করা সম্ভব নয়, কারণ একজন ইউপি সদস্যের এত টাকা বরাদ্দ থাকে না। তবে সরকার সংশ্লিষ্ট পক্ষকে সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছি।”
লোহাগাড়া উপজেলা প্রকৌশলী ইরফান বানী মুনিরি বলেন, “প্রয়োজনীয়তা সাপেক্ষে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
এমইউ/এসআর