সাভারের আশুলিয়ার আউকপাড়ায় দীর্ঘদিন ধরে জমি দখল, নিরীহ মানুষদের নির্যাতন ও চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলার পলাতক আসামি আইয়ুব আলী সিকদার ওরফে ‘কিলার শিকদার’কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার রাতে আশুলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সম্প্রতি দায়ের হওয়া একটি অপহরণ ও চাঁদাবাজির মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে আশুলিয়া এলাকায় ভূমিদস্যুতা, চাঁদাবাজি ও ডাকাতিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন আইয়ুব আলী সিকদার।
জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি পরিচয় দেওয়া এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ উঠে আসে গত ১৯ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়। স্থানীয়দের দাবি, ওই সময় তিনি সরাসরি গুলি চালান এবং ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের হয়ে অস্ত্র সরবরাহের দায়িত্ব পালন করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, আইয়ুব আলী সিকদার সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে সাধারণ মানুষের জমি দখল করতেন এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করতেন। আশুলিয়ার আউকপাড়ায় ‘নবাব স্টেট’ নামক এলাকায় প্রায় ২১ একর জমি জাল কাগজ তৈরি করে প্লট আকারে বিক্রি করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া, জমি দখলের চেষ্টা, মালিকদের ভয়ভীতি দেখানো ও মারধরের মাধ্যমে উচ্ছেদের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
স্থানীয়রা জানান, দলীয় পরিচয় ও অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। জমি দখল, চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনই ছিল তার মূল কার্যক্রম। তার সঙ্গে আরও অন্তত ২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র জড়িত, যাদের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে।
অপহরণ মামলার বাদী মো. বশির হাওলাদার জানান, গত ৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় সিকদার ও তার সহযোগীরা তাকে অপহরণ করে একটি বাড়িতে আটকে রাখে। সেখানে তাকে মারধর করে ২১,৫০০ টাকা আদায় করা হয় এবং প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার মালামাল লুটে নেয়া হয়।
আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল হান্নান বলেন, “চাঁদাবাজি ও অপহরণ মামলার আসামি আইয়ুব আলী সিকদারকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে জমি দখল, অপহরণ ও চাঁদাবাজির গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।”
ওএফ/আরএন