চলতি ২০২৫ অর্থবছরের জুন শেষে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ দাঁড়িয়েছে ১১২ দশমিক ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা প্রায় ১১ হাজার ২১৬ কোটি ডলার। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)।
তথ্য অনুযায়ী, গত সাড়ে ১৫ বছরে বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে প্রায় ৮১ বিলিয়ন ডলার। এ সময়ে সরকার আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা ও এআইআইবিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছ থেকে ব্যাপক হারে ঋণ নিয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি খাতও বিদেশি উৎস থেকে কম সুদের ঋণের প্রতি ঝুঁকেছে।
বর্তমানে বৈদেশিক ঋণের মধ্যে সরকারি খাতে রয়েছে প্রায় ৮২ শতাংশ, আর বেসরকারি খাতে প্রায় ১৮ শতাংশ।
গত মার্চে দেশের বৈদেশিক ঋণ ছিল ১০৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৭৩৬ কোটি ডলার। আর ছয় মাসে ঋণ বেড়েছে প্রায় ৮৪৩ কোটি ডলার; ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে এ ঋণের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৩৭৩ কোটি ডলার।
গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হয়। ২০২৪ সাল থেকে ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়তে শুরু করলে সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় সংকট দেখা দেয়। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি হওয়ায় দেশে ডলারের ঘাটতি বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার আমদানি নিয়ন্ত্রণ ও নতুন ঋণ গ্রহণসহ নানা পদক্ষেপ নিলেও রিজার্ভ নেমে আসে ২৪ বিলিয়ন ডলারে।
তবে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রিজার্ভে স্থিতিশীলতা এসেছে। প্রবাসী আয় বেড়েছে, পাশাপাশি বৈদেশিক ঋণের প্রবাহ অব্যাহত থাকায় ডলারের বিনিময় হারেও স্থিতিশীলতা ফিরেছে।
সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ অব্যাহত থাকার পরও দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবার ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
আরএন