জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করেছেন তিনজন শিক্ষক। তারা জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সদস্য।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার আগেই তারা বিভিন্ন কেন্দ্র ত্যাগ করেন। পরে নির্বাচন কমিশন অফিসের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক নাহরীন ইসলাম খান, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম এবং অধ্যাপক শামীমা সুলতানা।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক নাহরীন ইসলাম খান বলেন, প্রশাসন শুরু থেকেই দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করেছে। নানা অনিয়ম ও কারসাজি চালানো হয়েছে। এরকম একটি নির্বাচনের দায়ভার আমাদের নেওয়া উচিত নয়। প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে আমরা দায়িত্বশীল শিক্ষকরা এই নির্বাচন বর্জন করেছি।
এর আগে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে জাকসু নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মনোনীত প্যানেল। বিকেল পৌনে ৪টায় মওলানা ভাসানী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন ছাত্রদল-সমর্থিত জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদপ্রার্থী তানজিলা হোসেন বৈশাখী। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য প্যানেল সদস্যরাও।
সংবাদ সম্মেলনে বৈশাখী বলেন, ছাত্রশিবিরের সদস্যরা সাংবাদিক পরিচয়ে রেস্ট্রিকটেড জোনে প্রবেশ করছে, যেখানে অন্য প্রার্থীদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কাউকে সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। প্রশাসন সম্পূর্ণভাবে নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, শিবির নেত্রী মেঘলার কারচুপির কারণে একটি হলে ভোটগ্রহণ বন্ধ করা হয়েছে। একটি গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। অন্যান্য প্রার্থীরাও একই অভিযোগ তুলেছেন, কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
তিনি আরও বলেন, আমরা দাবি করেছিলাম একটি ‘ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার’ নির্বাচন। কিন্তু ভয়াবহভাবে দেখা যাচ্ছে, নির্বাচন মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একটি জামায়াতপন্থি নেতার মালিকানাধীন কোম্পানিকে, যারা সরাসরি সম্প্রচারের (লাইভ স্ট্রিমিং) মাধ্যমে সব ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করছে। এর ফলে ছাত্রশিবিরকে ভোট মনিটরের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের নির্বাচনী কার্যক্রম ব্যাহত করতে শিবির ও প্রশাসন মিলে সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচন ইঞ্জিনিয়ারিং করছে। এই নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত রায়ের প্রতিফলন ঘটছে না। এসব অনিয়ম ও পক্ষপাতমূলক আচরণের প্রতিবাদে আমরা নির্বাচন বর্জন করতে বাধ্য হয়েছি।
আরএন