ঢাকার শাহবাগ থানায় দায়ের করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক সচিব আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজ্জামানের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
বেলা আড়াইটার দিকে আবু আলম শহীদ খানকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়। প্রথমে তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়, পরে তাকে আদালতে তোলা হয়। শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক মো. তৌফিক হাসান তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন, যা আদালত মঞ্জুর করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, সাবেক সচিব আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খানকে গতকাল মধ্যরাতে শাহবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ২৮ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মঞ্চ ৭১’-এর আয়োজিত একটি গোলটেবিল আলোচনা থেকে সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীসহ ১৬ জনকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরদিন ২৯ আগস্ট শাহবাগ থানায় পুলিশের উপপরিদর্শক আমিরুল ইসলামের দায়ের করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। অভিযোগ রয়েছে, সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান ‘মঞ্চ ৭১’ নামক ওই প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত।
একই মামলায় আজ তাকেও গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও অন্যান্যরা ‘মঞ্চ ৭১’-এর ব্যানারকে ব্যবহার করে প্রকৃতপক্ষে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। তারা সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র ও অন্যদের প্ররোচিত করার মতো অপরাধ করেছেন।
এই মামলায় আবু আলম শহীদ খানের নাম নতুন আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মামলার শুরুতে যাদের আসামি করা হয়, তারা হলেন— সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন), মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন, মঞ্জুরুল আলম পান্না, কাজী এটিএম আনিসুর রহমান বুলবুল, গোলাম মোস্তফা, মো. মহিউল ইসলাম ওরফে বাবু, মো. জাকির হোসেন, মো. তৌছিফুল বারী খান, মো. আমির হোসেন সুমন, মো. আল আমিন, মো. নাজমুল আহসান, সৈয়দ শাহেদ হাসান, মো. শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, দেওয়ান মোহাম্মদ আলী ও মো. আব্দুল্লাহীল কাইয়ুম।
১৯৯৬ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকারের শেষ সময়ে সরকারি আমলাদের নিয়ে গঠিত সরকারবিরোধী প্ল্যাটফর্ম ‘জনতার মঞ্চ’-এর অন্যতম সংগঠক ছিলেন আবু আলম শহীদ খান। ওই বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে এবং তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার উপ-প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় ফিরে এলে তাকে ওএসডি করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় এলে তিনি জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পান। ২০১৫ সালে তিনি অবসরে যান।
আরএন